রাশিয়া–ইরান–চীনের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের
দুর্নীতি ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নয় দেশের ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ তালিকায় যেমন রয়েছে রাশিয়ার সরকারি দপ্তর, তেমনি রয়েছে ইরানের সরকারি কর্মকর্তা, চীনা নাগরিকও। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি–প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্র সম্পদ থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হবে। এমনকি নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পৃক্ততা রাখতে পারবে না। খবর রয়টার্সের।
আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ও মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সময় গত শুক্রবার মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নতুন এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানায়। বলা হয়, চীনের নাগরিক লি ঝেনু ও ঝুও জিনরং এবং তাঁদের দুজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পিংতান মেরিন এন্টারপ্রাইজসহ ও দালিয়ান ওশান ফিশিং কোম্পানিসহ ১০টি প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই দুই ব্যক্তি এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চীনভিত্তিক অবৈধ মাছ ব্যবসায় যুক্ত হয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে ওয়াশিংটন।
গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবৈধ মাছ ধরাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলেছিলন। ওই সময় তিনি একটি নিরাপত্তা স্মারকে সই করেন, যাতে অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করা হয়।
তবে নিজেদের মাছ ধরার প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে ওয়াশিংটনের চীনা দূতাবাস। দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেনগিউ বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার এখতিয়ার ওয়াশিংটনের নেই। এটা বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশি কার্যক্রমের নজির।’
এ ছাড়া চীনের তিব্বত অঞ্চলে ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত দুই চীনা কর্মকর্তার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি গণভোট আয়োজন করে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া। এ গণভোট তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিল রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন। ওয়াশিংটনের মতে, এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তাই প্রতিষ্ঠানটি ও সেটার ১৫ জন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ইউক্রেনের নাগরিকদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র দুই রুশ নাগরিক ও রুশ প্রশাসনকে সহায়তায় আরও চারজনকে অভিযুক্ত করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এ ছাড়া চলমান বিক্ষোভে দমন–পীড়ন চালানোর অভিযোগে কয়েকজন ইরানি সরকারি কর্মকর্তা, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বর্ডার গার্ড জেনারেল ব্যুরো, গিনির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলফা কন্ডে এবং এল সালভাদর, ফিলিপাইন, মালি ও গুয়াতেমালার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস ও নিউইয়র্কে জাতিসংঘে ইরানের মিশন তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।