ইসরায়েলের হামলা নিয়ে কি সুর বদলাচ্ছেন বাইডেন
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ও ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি নিয়ে সুর পাল্টাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে নিজের দল (ডেমোক্রেটিক পার্টি) ও সমর্থকদের মধ্য থেকে অব্যাহত চাপের মুখে বাইডেন তাঁর অবস্থান বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর প্রথম দিকে হামলায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা যখন দ্রুত বাড়ার খবর আসছিল, তখন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিল বাইডেনকে। গাজায় অসংখ্য ফিলিস্তিনির মৃত্যু হচ্ছে, এটা মানতেও কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলেন তিনি।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর দুই সপ্তাহ পর, গত ২৫ অক্টোবর বাইডেন বলেন, ‘(ইসরায়েলি হামলায়) নিহত মানুষের যে সংখ্যা আমাকে জানানো হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের দেওয়া সেই হিসাবে আমার ভরসা নেই। আমি নিশ্চিত, নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। তবে যুদ্ধ বাধালে যে মূল্য চোকাতে হয়, এটা (ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু) হচ্ছে তাই–ই।’
তবে বাইডেন প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাই বলে আসছেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনিদের নিহত হওয়ার যে হিসাব ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দিচ্ছে, তার প্রায় সব কটিই বিশ্বাসযোগ্য।
তবে গতকাল মঙ্গলবার বাইডেনের এক বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় যে বিরামহীন বোমাবর্ষণ করছে, তার সমালোচনা করছেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী গতকাল বাইডেন বলেন, ‘(যুক্তরাষ্ট্রের) সমর্থন হারাতে শুরু করেছে তারা (ইসরায়েল)।’
এর এক দিন আগে হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানেও গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলা নিয়ে একই ধরনের কথা বলতে শোনা গিয়েছিল বাইডেনকে।
গত সোমবার হোয়াইট হাউসের ওই অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, ‘তারা (ইসরায়েল) হামাসকে নির্মূল করা না পর্যন্ত আমরা তাদের সামরিক সহায়তা দিয়ে যাব। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তাদেরও (ইসরায়েল) সতর্ক থাকতে হবে। রাতারাতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের মত পাল্টে যেতে পারে।’
তবে গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলা নিয়ে সুর কিছুটা পাল্টালেও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে এখনো অনড় অবস্থানে রয়েছেন বাইডেন। ইসরায়েলকে আরও ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার সমমূল্যের সামরিক সহায়তা, অর্থাৎ অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিতে কংগ্রেসে একটি বিল পাসের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া এখনো গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর বিপক্ষেই অবস্থান তাঁর।