ডেমোক্র্যাটরা অকারণে আতঙ্কিত

ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে, ২৪ অক্টোবর ২০২৪ছবি : রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হেরে যেতে পারেন। তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক নেতার মধ্যে এ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে জরিপে খুব বেশি ব্যবধান বাড়াতে না পারা এবং ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের আত্মবিশ্বাস তাঁদের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। কিন্তু দ্য গার্ডিয়ান গত ১০ দিনের বিভিন্ন জরিপের গড় করে বলছে, ডেমোক্র্যাটদের এ আশঙ্কা অমূলক। এখনো কমলার বিপর্যয়ের মতো কিছু ঘটেনি।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর ৯ দিন। শেষ সময়ে এসে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনের দোরগোড়ায় এসেও দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা চলছে। কিন্তু গত জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা প্রতিযোগিতায় আসার পর ডেমোক্রেটিক পার্টি ঘিরে যে উদ্মাদনা ছিল, তাতে ভাটা পড়েছে। জরিপে ট্রাম্পের অবস্থান স্থিতিশীল থাকলেও কমলার জনপ্রিয়তা কমতে দেখা গেছে। এতে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ আর রিপাবলিকানদের মধ্যে চাঙা ভাব চলে এসেছে।

দ্য গার্ডিয়ান–এর পক্ষ থেকে গত ১০ দিনের জরিপগুলোর গড় করে দেখা গেছে, কমলা হ্যারিস এখনো ট্রাম্পের চেয়ে ১ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন। কমলার সমর্থন যেখানে ৪৭ শতাংশ, সেখানে ট্রাম্পের সমর্থন ৪৬ শতাংশ।

সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যেও এখনো পাল্লা কারও দিকে ঝুঁকে পড়েনি। ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট জিতে কে হোয়াইট হাউসে যাবেন, জরিপ থেকে আগেভাগে তার সঠিক ইঙ্গিত পাওয়া দুষ্কর। জরিপের গড় ধরলে দেখা যায়, দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে মিশিগানে ১ পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। এ ছাড়া ১ পয়েন্টেরও কম ব্যবধানে এগিয়ে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, উইসকনসিন ও নেভাদায়। অন্যদিকে ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলাইনায় ২ পয়েন্ট ও অ্যারিজোনায় ১ পয়েন্টে এগিয়ে।

তাই সমর্থনের হিসাব ধরলে কমলার জন্য এখনই এটা বিপর্যয়ের কোনো ইঙ্গিত নয় বা ট্রাম্পের জন্য জয়ের সুনিশ্চিত কোনো বার্তা নয়। বর্তমান ধারা চলতে থাকলে কমলাই ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে শেষ হাসি হাসবেন। আশার খবরের মধেই অনেক ডেমোক্র্যাটের মধ্যে এখন উদ্বেগ ছড়িয়েছে। শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, কমলা হেরে যাবেন। কেউ কেউ তাঁর হেরে যাওয়ার কারণ কী হতে পারে তার খোঁজও শুরু করেছেন। কেউ মনে করছেন, বাইডেনই হতে পারেন তাঁর হারার কারণ বা কমলা নিজেই এর জন্য দায়ী।

অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রচারশিবির উৎফুল্ল ও আত্মবিশ্বাসী। তাদের মুখে এখন হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন পোস্টের নিয়োগ ও নীতি কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

জনপ্রিয় ভোটে ধাক্কা খেতে পারেন কমলা

নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের এক জরিপ কমলার জন্য দুঃসংবাদ দিচ্ছে। গত চারবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরাই জনপ্রিয় ভোটে জিতে আসছেন। তবে এত দিন কমলা জনপ্রিয় ভোট জিততে চলেছেন এবং ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে হারবেন বলে আলোচনা চলছিল। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমস–এর জরিপে দেখা যাচ্ছে, কমলা আশানুরূপ ব্যবধান বাড়াতে পারেননি যাতে তিনি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে জিতে যাবেন, সে ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

সিএনএনের জরিপে সমান সমান

ভোটের আগে দেশজুড়ে নিজেদের চূড়ান্ত জনমত জরিপ চালিয়েছে সিএনএন। জরিপে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমানে সমান লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। এসএসআরএস এই জরিপ পরিচালনা করেছে, জরিপে ৪৭ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলাকে ও ৪৭ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বরে হওয়া জরিপে কমলা ৪৮ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৭ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পান। এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা জানিয়েছে এবার পত্রিকাটি কমলা কিংবা ট্রাম্প কাউকেই সমর্থন করবে না।