মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
প্রার্থী হওয়ার পথে আরও এগিয়ে কমলা হ্যারিস
বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর কমলা হ্যারিসের প্রচারশিবিরের তহবিলে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ দিয়েছেন চাঁদাদাতারা।
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে শুরু করেছেন কমলা হ্যারিস। জো বাইডেন প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর সামনে এসেছেন তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হওয়ার পথে আরও এগিয়ে গেছেন তিনি। যাঁদের ভোটে দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়, সেই ডেলিগেটদের (প্রতিনিধি) অধিকাংশই সোমবার তাঁর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
সাধারণত বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অনুষ্ঠিত দলের প্রাইমারিতে (প্রাথমিক বাছাই) প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে বেছে নেন ডেলিগেটরা। এবার তাঁদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আগামী মাসে ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত করার কথা ছিল। তবে বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে গত রোববার তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এরপর প্রশ্ন ওঠে—বাইডেনকে সমর্থন দেওয়া তালিকাভুক্ত ডেলিগেটরা এবার কী করবেন?
তবে তাঁদের বড় কোনো দোটানার মধ্যে পড়তে হয়নি। কারণ, বাইডেন নিজেই তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে সমর্থন জানিয়েছেন। আর কমলার ওপর বাজি ধরে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ দিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির অর্থদাতারাও। এসব মিলিয়ে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস শক্ত অবস্থানে চলে আসেন। আর ডেলিগেটরাও একে একে তাঁকে সমর্থন জানানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া শুরু করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে গত সোমবার প্রকাশিত খবর বলছে, কমলা হ্যারিস এরই মধ্যে দলের প্রায় ৪ হাজার ডেলিগেটের মধ্যে ১ হাজার ৯৭৬ জনের সমর্থন পেয়েছেন। দলের জাতীয় সম্মেলনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হতে এই সমর্থন যথেষ্ট। এই খবর প্রকাশের পর ওই দিন রাতে এক বিবৃতিতে কমলা বলেন, ‘দলের প্রার্থী নির্বাচিত হতে আজ রাতে আমি বড় পরিসরে সমর্থন পেয়েছি। এ নিয়ে আমি গর্বিত।’
এদিকে ডেলিগেটদের সমর্থন নিশ্চিত হওয়ার পর জোরালোভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন কমলা হ্যারিস। সোমবারেই ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনে দলের প্রচারশিবিরের কর্মীদের উদ্দেশে কথা বলেন তিনি। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্পকে একহাত নিয়ে কমলা বলেন, ট্রাম্প নারী নিপীড়নকারী। নিজের ভালোর জন্য তিনি আইন ভঙ্গ করতে পিছপা হন না। এসব কারণেই ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জয় পেতে চলেছে ডেমোক্রেটিক পার্টি।
রেকর্ড পরিমাণ চাঁদা আদায়
৫৯ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস নির্বাচনী লড়াইয়ে উতরে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি। তাঁকে নিয়ে বড় আশা দেখছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। যেমন মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘অত্যন্ত গর্ব ও সীমাহীন আশা নিয়ে’ তিনি কমলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। বাইডেনও প্রশংসা করে তাঁকে ‘সেরা’ বলেছেন।
ডেমোক্রেটিক পার্টির চাঁদাদাতারাও যে কমলাকে নিয়ে আশাবাদী, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে নির্বাচনী প্রচার তহবিলে তাঁদের দেওয়া অর্থের পরিমাণ থেকে। বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর কমলার প্রচারশিবিরের জন্য ২৪ ঘণ্টায় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার দিয়েছেন তাঁরা। ডেমোক্র্যাট শিবির বলছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে এর আগে কখনো এক দিনে এত অর্থ সংগৃহীত হয়নি। আর এই অর্থদাতাদের মধ্যে ৮ লাখ ৮৮ হাজার জন তৃণমূলের নেতা–কর্মী রয়েছেন। তাঁদের ৬০ শতাংশই ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অর্থ দিয়েছেন।