যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ: অধ্যাপকের পাঁজরের ৯টি হাড় ও হাত ভেঙে দিয়েছে পুলিশ

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে নিজেদের মধ্যে এভাবে বন্ধন সৃষ্টি করেন বিক্ষোভকারী এ শিক্ষার্থীরা। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, সেন্ট লুইস, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ছবি: এপি

যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলাকালে এক অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করার সময় তাঁর পাঁজরের ৯টি হাড় ও একটি হাত ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। ভুক্তভোগী শিক্ষক এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক স্টিভ তামারি সাউদার্ন ইলিনয়েস ইউনিভার্সিটি এডওয়ার্ডসভিলের ইতিহাসের অধ্যাপক। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ তিনি।

এ ঘটনায় ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, গত শনিবার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্টিভ তামারি দৃশ্যত বিক্ষোভকারীদের ছবি তোলার বা ভিডিও ধারণের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেপরোয়াভাবে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান তাঁকে।

আরও পড়ুন

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার সময় অধ্যাপক তামারি মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশের এক সদস্য তাঁকে হাঁটু দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। পরে দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর কয়েকজন পুলিশ তাঁর নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীর টেনেহিঁচড়ে একটি ভ্যানের দিকে নিয়ে যায় ও মাটিতে উপুড় করে ছুড়ে ফেলে।

গ্রেপ্তার হওয়ার সময় অধ্যাপক তামারি মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশের এক সদস্য তাঁকে হাঁটু দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। পরে দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর কয়েকজন পুলিশ তাঁর নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীর টেনেহিঁচড়ে একটি ভ্যানের দিকে নিয়ে যায় ও মাটিতে উপুড় করে ছুড়ে ফেলে।

বিক্ষোভ চলাকালে এই অধ্যাপকের স্ত্রী সান্দ্রা তামারিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সান্দ্রা একটি পোস্ট দেন। তাতে লেখেন, স্টিভ তামারিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর ব্যথা রয়েছে ও ভাঙা হাতে অস্ত্রোপচার করতে হবে। পোস্টে সান্দ্রা আরও লেখেন, ঘটনার সময় কোনো গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন না তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দিকে অস্ত্র উঁচিয়ে আছেন এক পুলিশ সদস্য
ফাইল ছবি: রয়টার্স

এ ঘটনায় একাডেমিক প্রকাশনা ‘দ্য মিডল ইস্ট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রজেক্ট’ এক বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়, এমইআরআইপির নেতা ও কর্মীরা অধ্যাপক তামারির ওপর হামলা এবং তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘটনা শুনে আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ। ইতিপূর্বে অধ্যাপক তামারি ও তাঁর স্ত্রী দুজনই এ প্রকাশনায় কাজ করেছেন।

আরও পড়ুন

এমইআরআইপি বলেছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের সহিংসতা দুই সপ্তাহ ধরে উদ্বেগজনক প্রবণতা হয়ে উঠেছে। কিন্তু স্টিভের সঙ্গে যা করা হয়েছে, সেটি চূড়ান্ত পর্যায়ের সহিংস আচরণ; এমনকি তা এ মানও ছাপিয়ে গেছে।’  

মুঠোফোন উঁচিয়ে আলো জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের
ফাইল ছবি: এএফপি

‘আমরা পুলিশের নিষ্ঠুরতা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ যেভাবে ক্যাম্পাসকে সামরিকীকরণ করছে, তার নিন্দা জানাই’, বলেছে এমইআরআইপি।

আরও পড়ুন