রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিকে পাশে চান বাইডেন
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় ইউরোপের সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জার্মানিকে পাশে চান বাইডেন।
এদিকে ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। রাশিয়ার সামরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একযোগে কাজ করতে জি–৭–এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এক টুইট বার্তায় বাইডেন লিখেছেন, গত শুক্রবার শলৎজকে অভিনন্দন জানাতে ফোন করেছিলেন তিনি। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ, বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শলৎজের আমলে জার্মানির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাইডেন। শনৎজ চ্যান্সেলর হওয়ার পর এটাই তাঁর সঙ্গে বাইডেনের প্রথম ফোনালাপ।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এর ফলে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ইউক্রেনের অভিযোগ, হামলার চালানোর জন্য সীমান্তে বাড়তি সেনা জড়ো করেছে মস্কো। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে আগাম হামলা চালানোর ইচ্ছা মস্কোর নেই।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বাইডেন। গত মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে পুতিনকে এই হুমকি দেন তিনি। একই সুর ইউরোপের দেশগুলোর কণ্ঠেও।
বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের আগেই ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন শলৎজ। তিনি বলেন, ইউরোপের সীমান্তে পরিবর্তন আনার চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না।
এদিকে ইউক্রেনে আক্রমণ করলে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে ইইউ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত শুক্রবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়ন জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এ সময় উরসুলা ফন ডের লিয়ন বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে এখনো আলোচনা করেনি ইইউভুক্ত ২৭ দেশ। তবে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালালে মস্কোকে চড়া মূল্য দিতে হবে।’
উরসুলা ফন ডের লিয়ন আরও বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব রাখতে চাই। তবে এটা পুরোপুরি দেশটির আচরণের ওপর নির্ভর করবে। মস্কো প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। এমন আচরণ পুরো ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।’
ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লিভারপুলে আলোচনায় বসেছিলেন বিশ্বের শীর্ষ সাত ধনী দেশের জোট জি–৭–এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠকে জি–৭ দেশগুলো ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনাসমাবেশের ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ জানিয়েছে। একই সঙ্গে ইউক্রেনে হামলা করলে রাশিয়াকে মূল্য দিতে হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন জি–৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস জি–৭–এর সদস্যদেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
জি–৭–এর বৈঠকের আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন লিজ ট্রাস। বৈঠক শেষে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা কৌশলগত ভুল হিসেবে বিবেচিত হবে।