মার্কিন প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যায় সৌদির যুবরাজকে দায়ী করা হতে পারে
সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হতে পারে। এই প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যার জন্য সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করা হতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত চারজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, খাসোগিকে হত্যার অনুমোদন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসবে।
এদিকে গতকাল সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, খাসোগি হত্যা মিশনে ব্যবহৃত দুটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের মালিক এমন একটা কোম্পানি, যেটি তখনকার সময় থেকে প্রায় এক বছর আগে জব্দ করেন সৌদির যুবরাজ।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি তৈরি করতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে সিআইএ। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটিতে এমন মূল্যায়ন রয়েছে যে খাসোগি হত্যার অনুমোদন ও সম্ভবত আদেশ যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি প্রতিবেদনটি পড়েছেন। তিনি শিগগিরই সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন বলে আশা করছেন।
সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন নীতির অংশ হিসেবে বাইডেন প্রশাসন খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে এই গোপন মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে যাচ্ছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ইয়েমেনে আগ্রাসনের বিষয়ে রিয়াদ অনেকটা ছাড় পেয়ে এসেছে। বাইডেনের সময় এই দৃষ্টিভঙ্গির বদল লক্ষ করা যাচ্ছে।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। সেখানে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর লাশ কেটে টুকরা টুকরা করে গায়েব করে দেওয়া হয়। তাঁর দেহাবশেষ আর পাওয়া যায়নি।
সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কট্টর সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি।
সৌদি আরব প্রথমে খাসোগি খুন হওয়ার কথা অস্বীকার করে। পরে তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
খাসোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সন্দেহ করা হয়। সৌদির যুবরাজ এই হত্যায় তাঁর সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। তবে সৌদির শাসক হিসেবে তিনি এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না বলে স্বীকার করেন।
খাসোগি হত্যার দায়ে সৌদির আদালত দেশটির পাঁচজন নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে খাসোগির পরিবার হত্যাকারীদের মাফ করে দিলে তাঁদের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড করা হয়।