ইউক্রেনে সমঝোতার ভিত্তি হতে পারে চীনের শান্তি প্রস্তাব: পুতিন
চীনের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার ভিত্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ মঙ্গলবার ক্রেমলিনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
পুতিন বলেন, ‘যখন পশ্চিম ও কিয়েভ প্রস্তুত থাকবে, তখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিষ্পত্তিতে চীনের দেওয়া শান্তি পরিকল্পনার অনেক শর্ত ভিত্তি হিসেবে নেওয়া যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, সির সঙ্গে তাঁর বৈঠকে এই শান্তি পরিকল্পনা ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে।
গতকাল সোমবার দুই দিনের সফরে মস্কো যান সি চিন পিং। আজ ছিল সফরের শেষ দিন। আজ বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন দুই শীর্ষ নেতা। ঘোষণা দুটির একটির বিষয়বস্তু চীন ও রাশিয়ার অর্থনৈতিক সহযোগিতার পরিকল্পনা। অপরটি দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদারের পরিকল্পনা নিয়ে।
স্বাক্ষর শেষে সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতি পড়ে শোনান পুতিন ও সি। শুরুতেই রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা। রাশিয়ার বিদেশি বাণিজ্যিক অংশীদারদের মধ্যে চীন নেতৃত্বস্থানে রয়েছে।
রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে চীন শীর্ষে রয়েছে উল্লেখ করে পুতিন বলেন, জ্বালানিসহ অর্থনীতি, যোগাযোগ ও লজিস্টিক খাতগুলোতে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করবে মস্কো। এ ছাড়া পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এগিয়ে নিতে কাজ করবে দুই দেশ।
পুতিনের পর সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতি পড়ে শোনান সি চিন পিং। তিনি বলেন, মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে পেরে তিনি ‘খুব খুশি’। ‘ঐতিহ্যবাহী আতিথেয়তা ও উষ্ণ অভ্যর্থনার’ জন্য রুশ প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদও জানান তিনি।
পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক ‘খোলামোলা ও বন্ধুত্বপূর্ণ’ ছিল বলে জানান চীনের প্রেসিডেন্ট। সি বলেন, তিনি ও পুতিন ১০ বছরের বেশি সময় ধরে একে অপরকে সমর্থন করে আসছেন। আর এটা ভবিষ্যতে চালিয়ে যাবেন।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের বিষয়ে সি বলেন, তিনটি খাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ওপর নজর দেওয়া হবে। সেগুলো হলো, জ্বালানি বাণিজ্য, কাঁচামাল বাণিজ্য ও ইলেকট্রনিক বাণিজ্য।
বেইজিংয়ের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, গত মাসে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে চীন তার অবস্থান প্রকাশ করেছে। ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আমরা নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে জাতিসংঘের সনদ মেনে চলছি।’
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম রাশিয়া সফরে গেলেন সি চিন পিং। আর তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর দেশের বাইরে প্রথম পা রাখলেন তিনি। রাশিয়া সফরে গিয়ে চলতি বছরেই ভ্লাদিমির পুতিনকে চীনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।