হন্ডুরাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সিওমারা কাস্ত্রোর শপথ গ্রহণ

হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট সিওমারা কাস্ত্রো
ছবি: এএফপি

হন্ডুরাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন বামপন্থী নেত্রী সিওমারা কাস্ত্রো। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শপথ নেন তিনি। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল ৬২ বছর বয়সী সিওমারা কাস্ত্রো বিচারপতি কারলা রোমোরোর সামনে হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে আইনসভা কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিতে তাঁর পছন্দের তালিকায় থাকা লুইস লেদন্দো উপস্থিত ছিলেন। তিনি ২৯ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সিওমারাকে প্রেসিডেন্টের উত্তরীয় পরিয়ে দেন। এ ছাড়া সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফেলিপ এবং তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাইসহ বিশ্বের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তি।

তেগুসিগালপা ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দেওয়া প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাষণে সিওমারা হন্ডুরাসের চলমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। সিওমারার ভাষ্য অনুযায়ী তিনি ‘দেউলিয়া’ হয়ে পড়া একটি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। অপরাধ ও দারিদ্র্যকবলিত দেশটিকে ‘সমাজতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে’ পরিণত করার শপথ নেন এই নেত্রী। বর্তমানে হন্ডুরাসের সরকারি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার।

গত নভেম্বরে হন্ডুরাসে ডানপন্থী ন্যাশনাল পার্টির ১২ বছরের শাসনের ইতি ঘটিয়ে জয় লাভ করেন সিওমারা কাস্ত্রো। ২০০৯ সালে এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাঁর স্বামী ম্যানুয়েল জেলায়াকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে উৎখাতের পর ন্যাশনাল পার্টির শাসন শুরু হয়েছিল।

গতকাল সিওমারা এক টুইটার পোস্টে লেখেন, ‘১২ বছরের সংগ্রাম, ১২ বছরের প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে আজ জনগণের সরকার যাত্রা শুরু করল।’

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিওমারার সঙ্গে প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে বৈঠক করেন কমলা হ্যারিস। তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাইয়ের সঙ্গেও একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে এ বৈঠক হবে।

নির্বাচনী প্রচারণায় সিওমারা অঙ্গীকার করেছিলেন যে জয় পেলে অবিলম্বে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক শুরু করবেন। তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে চীন। এ ব্যাপারে বছরের পর বছর ধরে মিত্র দেশগুলোকে নিজেদের পক্ষে রাখার চেষ্টা করছে দেশটি। যে ১৪টি দেশ তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তার একটি হন্ডুরাস।