নতুন শান্তিচুক্তিতে কলম্বিয়া
কলম্বিয়ার বামপন্থী গেরিলা সংগঠন রেভল্যুশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া (ফার্ক) দেশটির সরকারের সঙ্গে নতুন সংশোধিত শান্তিচুক্তি করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে আগের চুক্তিটি গণভোটে প্রত্যাখ্যাত ও বাতিল হয়ে যায়। এর মাস খানেক পর নতুন চুক্তিটি হলো। এবারের সংশোধিত চুক্তিটি গণভোটে তোলার বদলে কংগ্রেসে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
কলম্বিয়ার ৫২ বছরের সংঘাতে ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। এ সংঘাত সমাপ্তির লক্ষ্যে এ চুক্তি হয়েছে।
আগের চুক্তিটি করার সময় যে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছিল, সংশোধিত চুক্তিটি করার সময় তা করা হয়নি। বোগোতায় এক ছোটখাটো আয়োজনে চুক্তিটি সম্পাদন করা হয়। বৃহস্পতিবারে কোলন থিয়েটারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৮০০ অতিথি ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ফার্ক নেতা রদ্রিগো লনডোনো ও কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোষ শান্তিচুক্তির পর পরস্পর হাত মেলান।
ফার্ক নেতা বলেন, তাঁদের এই চুক্তি অবশ্যই যুদ্ধের সমাপ্তি টানবে, যাতে তাঁরা পরস্পরের সমস্যা সভ্যভাবে মোকাবিলা করতে পারেন।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস নতুন এই শান্তিচুক্তির বিষয়ে বলেন, ‘এটি অপেক্ষাকৃত ভালো। যেসব বিষয় পরিবর্তনের জন্য আলোচনায় এসেছিল, সেগুলো সমন্বয় করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আরও কার্যকর শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।’
শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে দেরি করতে চান না তিনি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে কংগ্রেসে এ নিয়ে ভোটাভুটি সেরে ফেলতে চান তিনি।
এএফপির খবরে জানানো হয়, চুক্তি সম্পাদনের আগে ১৩ নভেম্বর কিউবার রাজধানী হাভানায় শান্তিচুক্তি নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি পড়ে শোনানো হয়। যৌথ বিবৃতিটি পড়ে শোনান কিউবা ও নরওয়ের কূটনীতিকেরা। এই শান্তিচুক্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এই দুটি দেশ যুক্ত আছে।
দুই পক্ষের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটাতে নতুন একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হয়েছি। এখানে কিছু পরিবর্তন, পরিমার্জন আনা হয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর কাছ থেকে পাওয়া মতামত সন্নিবেশিত করা হয়েছে।’ বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থিতিশীল ও টেকসই শান্তির জন্য সামাজিক, রাজনৈতিক গোষ্ঠীসহ কলম্বিয়ার সবার সমর্থন প্রয়োজন।
ফার্ক গেরিলাদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রথম শান্তিচুক্তিটি চলতি বছরের ২ অক্টোবরের গণভোটে বাতিল হয়ে যায়। ৫০ দশমিক ২ শতাংশ লোক চুক্তিটির বিপক্ষে ভোট দেন। তবে ওই শান্তিচুক্তি সইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তথ্যসূত্র: বিবিসি, এএফপি।
আরও পড়ুন: