ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কিনতে পারবেন আর্জেন্টিনার নারীরা
আর্জেন্টিনার নারীদের জরুরি জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কেনার জন্য এত দিন চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্রের দরকার হতো। এই নিয়ম তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে দেশটির নারীরা জরুরি প্রয়োজনের সময় সহজেই জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কিনতে পারবেন।
দেশটির সরকার জানিয়েছে, জরুরি জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা মর্নিং-আফটার পিল সহজে কিনতে পারার মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ রোধ ও ভ্রুণ নষ্ট করা বন্ধের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতা’ দূর হবে।
সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়েছে আর্জেন্টিনার নারীবাদী সংগঠনগুলো। তাদের মতে, ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির নারীদের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অগ্রগতির জন্য এটা বড় একটি অর্জন।
আর্জেন্টিনার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই উদ্যোগের ফলে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ এড়ানো যাবে। পাশাপাশি দেশটির যেসব মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সরবরাহ ও জন্মনিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত শিক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন, তা–ও অনেকাংশে দূর করা যাবে।
ভ্যালেরিয়া ইসলা আর্জেন্টিনার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যৌন এবং প্রজননস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, এ উদ্যোগ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা দূর করবে। জরুরি পরিস্থিতিতে পৌঁছানোর আগেই মানুষেরা সহজে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কিনতে পারবেন।
নারীবাদী সংগঠক ভেনেসা গাগলিয়ার্দি বলেন, সরকারি হিসাবেই আর্জেন্টিনায় গর্ভধারণ করা প্রতি ১০ জন কিশোরীর মধ্যে ৭ জন অপরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ করে। তাই এই উদ্যোগ জরুরি জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি নিয়ে সমাজের ভ্রান্তধারণা দূর করতে সহায়তা করবে।
সাধারণ মানুষের প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে আর্জেন্টিনা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন উদ্যোগের সবশেষ উদাহরণ এটা। এর আগে ২০২০ সালে দেশটির সরকার গর্ভাবস্থার ১৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতকে বৈধ ঘোষণা করে। এর আগে শুধু ধর্ষণের ঘটনা ও প্রসূতি মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলে গর্ভপাতের অনুমতি ছিল।
এই নিয়ম চালুর সময় আর্জেন্টিনার ক্যাথলিক গির্জার পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি তোলা হয়েছিল। সিনেটরদের এ–সংক্রান্ত বিল পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছিল গির্জা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতে কাজ হয়নি।
উল্লেখ্য, মর্নিং-আফটার পিল অরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের ১২০ ঘণ্টার মধ্যে গর্ভধারণ প্রতিরোধে সহায়ক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, এই বড়ি ১২ ঘণ্টার মধ্যে আরও বেশি কার্যকর।