বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থী
দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গুলিতে মারা গেছেন। এরপর থেকে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্ট হয়েছে। কিন্তু পিছপা হননি। নির্বাচনের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বুলেটপ্রুফ (গুলি নিরোধক) জ্যাকেট পরে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। বলা হচ্ছে, ইকুয়েডরের আন্দ্রিয়া গঞ্জালেজের কথা। ইকুয়েডরের আসন্ন নির্বাচনে ‘মুভিমিয়েন্তো কনস্ট্রুয়ে’ দল থেকে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।
আন্দ্রিয়া গঞ্জালেজ দিনের ২৪ ঘণ্টাই বুলেটপ্রুফ (গুলি নিরোধক) জ্যাকেট পরে থাকছেন। বললেন, ‘ফার্নান্দোর রাজনৈতিক ধারাকে হারিয়ে যেতে আমি দেব না। এটি আমার কাছে একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়।’
ইকুয়েডরে আগামী রোববার এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। এর আগে ৯ আগস্ট রাজধানী কুইটোতে প্রচারের সময় আন্দ্রিয়ার দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও গুলিতে নিহত হন। তাঁর মাথায় তিনটি গুলি করা হয়েছিল।
ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও মারা যাওয়ার পর ‘মুভিমিয়েন্তো কনস্ট্রুয়ে’ দল প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন ক্রিশ্চিয়ান জুরিতা। ৫৯ বছর বয়সী ফার্নান্দো ছিলেন একজন সাংবাদিক ও ইকুয়েডরের জাতীয় পরিষদের সদস্য।
ক্রিশ্চিয়ান জুরিতার সঙ্গে ফার্নান্দোর একটি মিল রয়েছে। তা হলো, ফার্নান্দোর মতো জুরিতাও সাংবাদিক। সেই জুরিতাকে রানিং মেট হিসেবে পেয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী আন্দ্রিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি মাদক রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।’ ফার্নান্দোর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত এটি রাজনৈতিক গুপ্তহত্যা। এটি অপরাধী চক্র এবং সংঘবদ্ধ অপরাধের চেয়েও বেশি কিছু।’
ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিওকে হত্যার ঘটনা ছিল আকস্মিক। তাঁকে গুলি চালানোর পর পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে এক হামলাকারী নিহত হন। তবে কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে ইকুয়েডরের পুলিশ জানিয়েছিল, ফার্নান্দো হত্যার ঘটনায় ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা সবাই কলম্বিয়ার নাগরিক।
ফার্নান্দোকে হত্যার ঘটনায় গোটা জাতি স্তব্ধ হয়ে যায়। সেই সময় ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো বলেছিলেন, এটা সংঘবদ্ধ অপরাধ, যা পুরো দেশকে স্তব্ধ করেছে। যেই জড়িত থাকুক, অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। বিচার করা হবে।
তবে সেই বিচার কবে হবে, এটা অজানা। কারণ, প্রতিবেশী দেশগুলো এসব অপরাধ মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। কয়েক দশক ধরে মাদক পাচার ও সংঘবদ্ধ অপরাধ-সংক্রান্ত সহিংসতা থেকে মুক্ত ছিল ইকুয়েডর। সেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখাটা এখন দেশটির জন্য চ্যালেঞ্জ।
নির্বাচনী প্রচারণায় ফার্নান্দো দুর্নীতি ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনের ওপর জোর দিয়েছিলেন। গুটিকয় প্রার্থীর মধ্যে তিনিও একজন ছিলেন, যাঁরা সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছিলেন।