বিলাসবহুল ঘড়ির খোঁজে পেরুর প্রেসিডেন্টের বাড়িতে অভিযান
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের বাসভবনে অভিযান চালিয়েছেন দেশটির পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা। তাঁর বিরুদ্ধে চলমান একটি দুর্নীতি তদন্তের অংশ হিসেবে আজ শনিবার এ অভিযান চালানো হয়। বিলাসবহুল কয়েকটি ঘড়ির তথ্য গোপন করার অভিযোগে বলুয়ার্তের বিরুদ্ধে ওই তদন্ত চলছে।
পেরু পুলিশ ও সরকারি কৌঁসুলিরা যৌথভাবে আজকের অভিযান চালিয়েছেন। পুরো অভিযান স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। পুলিশের নথিপত্র থেকে জানা গেছে, অভিযানে প্রায় ৪০ কর্মকর্তা অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা বিলাসবহুল রোলেক্স ঘড়ির খোঁজে তল্লাশি চালান। পুলিশ বলছে, ওই ঘড়িগুলো সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেননি প্রেসিডেন্ট।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে লা এনসাররোনা নামের একটি গণমাধ্যম বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে বিলাসবহুল ঘড়ি পরা অবস্থায় দিনা বলুয়ার্তের একাধিক ছবি প্রকাশ করে। ছবিগুলো ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পরের সময়কার। সেই মাসে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। ছবি প্রকাশের পর এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত দুই বছরে প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের যে সম্পদ হয়েছে, তার পর্যালোচনা করা হবে।
এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়। সে ধারাবাহিকতায় আজকের অভিযান চালানো হয়েছে। এ অভিযানের অনুমতি দিয়েছেন পেরুর সুপ্রিম কোর্ট।
অভিযানের সময় লিমার সারকুইলো এলাকায় প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে রাখতে দেখা যায় সরকারি কর্মকর্তাদের। সে সময় প্রেসিডেন্ট বাড়িতে ছিলেন না বলেই মনে হয়েছে। এ অভিযান ‘সংবিধানবিরোধী’ বলে উল্লেখ করেছেন পেরুর প্রধানমন্ত্রী গুস্তাভো আদ্রিয়ানজেন।
দেশটিতে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা এমনিতেই কমতির দিকে রয়েছে। এরই মধ্যে দুর্নীতির এ তদন্তের কারণে নতুন করে রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়লেন তিনি। তবে ক্ষমতায় থাকাকালে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন—এমন অভিযোগে যদি অভিযুক্তও হন, তারপরও তাঁর বিচার শুরু করা যাবে না। সংবিধান অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুলাই মাসে বলুয়ার্তের প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ শেষ হওয়া বা এর মাঝে তাঁর অভিশংসন পর্যন্ত বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে আজকের অভিযানের পর এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি পেরুর প্রেসিডেন্টের কার্যালয়। তবে গত সপ্তাহে ৬১ বছর বয়সী বলুয়ার্তে বলেছিলেন, ‘আমি সরকারি প্রাসাদে পরিষ্কার হাত নিয়ে প্রবেশ করেছিলাম, আর যখন ছেড়ে যাব, পরিষ্কার হাত নিয়েই যাব।’
সরকারি বেতনে কীভাবে এত দামি সব ঘড়ি কিনেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সেদিন বলুয়ার্তে বলেছিলেন, ১৮ বছর বয়স থেকে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন। এগুলো সেই অর্থে কেনা।