যুক্তরাষ্ট্র ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে, অভিযোগ রাশিয়া–চীনের

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া ও চীন। মস্কো ও বেইজিংয়ের ভাষ্য, ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান–সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে চালানো মার্কিন বাহিনীর হামলা অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

গতকাল সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলা হয়। রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের এ জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছিল।

গত ২৮ জানুয়ারি জর্ডানে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে তিন মার্কিন সেনা নিহত হন। এর জবাবে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান–সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে মার্কিন বাহিনী। গত শুক্রবার রাতভর দেশ দুটির কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।

এসব হামলার জেরে গাজায় চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ একটি আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, এটা স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার লক্ষ্য সুনির্দিষ্টভাবে, ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাতকে বাড়ানো।

চীনের রাষ্ট্রদূত জুন ঝাং প্রায় অভিন্ন অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ (প্রতিশোধমূলক হামলা) অবশ্যই মধ্যপ্রাচ্যে ‘ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার’ সহিংসতার দুষ্টচক্রকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক অভিযানে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ক্ষোভ বেড়েছে। লেবানন, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলার জবাবে গাজায় সর্বাত্মক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

আরও পড়ুন

জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা ‘সব পক্ষকে পিছিয়ে আসার এবং সম্ভাব্য আঞ্চলিক সংঘাতের মারাত্মক মানবিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি বিবেচনার’ আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো বলেন, পুনরায় উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার যাতে আর অবনতি না ঘটে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এ হামলার সমালোচনা করেছে ইরাক ও সিরিয়ার সরকার। ইরানও এর সমালোচনা করেছে। গত মাসে জর্ডানে চালানো ড্রোন হামলায় তাদের কোনো ভূমিকা থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটি।

ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি কাউন্সিলকে বলেন, ‘ইরান বা তার সশস্ত্র বাহিনীকে হামলার জন্য দায়ী করার যেকোনো প্রচেষ্টা বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন ও অগ্রহণযোগ্য।’

হোয়াইট হাউস রোববার বলেছে, তারা আরও প্রতিশোধমূলক হামলার পরিকল্পনা করছে।

জাতিসংঘের মার্কিন ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর রবার্ট উড বলেন, ‘বিষয়টি স্পষ্ট করা দরকার যে যেখানে আমরা সক্রিয়ভাবে গাজায় সংঘাত নিয়ন্ত্রণ ও প্রশমনে কাজ করছি, তেমন অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র আর সংঘাত চায় না।’