সেনাপ্রধান বাজওয়াকে কি সরাতে চেয়েছিলেন ইমরান

সেনাপ্রধান জেনারেল কামার বাজওয়া ও ইমরান খানছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে সরিয়ে দেওয়ার খবর নাকচ করেছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ার আগে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের ইমরান বলেছেন, প্রতিরক্ষা বিভাগে কোনো ধরনের রদবদল আনার পরিকল্পনা তাঁর নেই। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জিও নিউজ এসব তথ্য জানিয়েছে।

সম্প্রতি ইমরানের দল পিটিআই থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন লিয়াকত হুসেইন। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেন, ইমরান খান সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে সরিয়ে দিতে চাইছেন।
এর মধ্যেই গতকাল শনিবার জিও নিউজের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় এ ধরনের পরিকল্পনা ইমরানের ছিল না বলে দাবি করেছে নির্ভরযোগ্য সূত্র। ইমরান নিজেই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেনাপ্রধানকে বরখাস্ত করা কিংবা এ–সংক্রান্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে কথাই হয়নি। আইন ও সংবিধানের সঙ্গে সংগতি রেখে আমি আমার কাজ করব।’

আরও পড়ুন

সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে অনাস্থা ভোট নিয়েও জানতে চেয়েছিলেন। তখন ইমরান বলেন, তিনি কোনোভাবেই পরাজয় মেনে নেবেন না। এ পিটিআই নেতা আরও বলেন, ‘আমি অঙ্গীকার করছি, কখনো পাকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। আমি জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেব।’

আরও পড়ুন

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়ে জানতে চাইলে ইমরান বলেন, যখনই কোনো বৈঠক ডাকা হয় তখনই গুজব ছড়াতে শুরু করে। কোনো ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে গতকাল রাতে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ১২টার দিকে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি শুরু হয়। এর কিছু সময় পর ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়। অনাস্থা প্রস্তাবে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাবটি পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।

আরও পড়ুন

আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবটি এনেছিল বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।

এ অবস্থায় স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন। টানা পাঁচ দিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে গতকাল অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।