ইসলামাবাদের ‘রেড জোনে’ ইমরানের সমর্থকেরা
‘আজাদি মার্চ’ নিয়ে ইসলামাবাদে আসা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা-কর্মীদের একটি অংশ বিধিনিষেধ আরোপিত ‘রেড জোনে’ ঢুকে পড়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে এই মার্চের ডাক দেন পিটিআই চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। খবর ডনের।
গতকাল বুধবার থেকে ইমরান খানের ডি-চকে পৌঁছানোর অপেক্ষায় ছিলেন নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা ‘রেড জোনে’ ঢুকে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় সরকারকে ছয় দিনের সময় বেঁধে দেন ইমরান খান। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, দাবি মানা হলে তিনি আবার রাজধানীতে ফিরে আসবেন।
ইসলামাবাদ পুলিশের মুখপাত্রের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, পুলিশ, রেঞ্জারস ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘ধৈর্যের’ সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের থামিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ইসলামাবাদের পুলিশ মহাপরিদর্শক আকবর নাসির খানও ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। বিক্ষোভকারীদের ‘রেড জোন’ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
ডন নিশ্চিত হয়েছে, এরপরও পিটিআই কর্মীরা ‘রেড জোনে’ ঢুকে পড়েন। পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর তাঁরা ‘রেড জোন’ ছাড়তে শুরু করেন। ‘রেড জোনে’ সুপ্রিম কোর্ট, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, মার্কিন দূতাবাসসহ কয়েকটি স্পর্শকাতর ভবন রয়েছে।
এদিকে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ‘রেড জোনে’ অবস্থিত সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা রক্ষায় সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সংবিধানের ২৪৫ অনুচ্ছেদের অধীন সেনা মোতায়েনের এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগে সকালে ইসলামাদের নবম অ্যাভিনিউতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে সরকারকে ছয় দিনের সময় বেঁধে দেন ইমরান খান। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দাবি মানা হলে ‘গোটা জাতিকে নিয়ে’ তিনি আবার রাজধানীতে ফিরে আসবেন।
ইমরান খান বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সরকার পার্লামেন্ট ভেঙে না দেওয়া এবং নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান করব। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় আমি যা দেখলাম, তারা (সরকার) দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে চায়।’
সরকার জনগণ ও পুলিশের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় দাবি করে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, তিনি ইসলামাবাদে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে গেলে সরকার খুশি হবে। কারণ, এতে জনগণ এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে গত ৯ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশজুড়ে একের পর এক সমাবেশ করেন ইমরান খান। নতুন নির্বাচনের দাবিতে সর্বশেষ ইসলামাবাদ অভিমুখে ২৫ মে ‘আজাদি মার্চ’-এর ডাক দেন তিনি।
তবে কবে নাগাদ নির্বাচন দেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। তারা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আইনে সংস্কার আনার কথা বলছে। সরকার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারে বলেও তারা ইঙ্গিত দিয়েছে।