অভিন্ন পাঠ্যক্রম চালু করছে পাকিস্তান
পাকিস্তান সরকার আগামী আগস্ট থেকে দেশটিতে একক জাতীয় পাঠ্যক্রম চালু করতে যাচ্ছে। মূলত, প্রাথমিক পর্যায় দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হবে। আর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য আগামী বছর এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য এমন পাঠ্যক্রম চালু হবে ২০২৩ সালে। গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন।
ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের অন্যতম নির্বাচনী ইশতেহার ছিল দেশটিতে অভিন্ন পাঠ্যক্রম চালু করা। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে গত বছর থেকে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী শাফকাত মাহমুদ কাজ শুরু করেন।
পাকিস্তানের জাতীয় পাঠ্যক্রম পরিষদের (এনসিসি) প্রধান রফিক তাহির ডনকে বলেন, তাঁরা অভিন্ন পাঠ্যক্রম চালুর সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে বই ছাপার কাজ চলছে। এই বই দিয়ে আগস্ট থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে। তিনি জানান, তাঁদের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দেশটির সব প্রদেশের প্রতিনিধিরা আছেন।
রফিক তাহির বলেন, প্রথমে সিন্ধু প্রদেশ এই পাঠ্যক্রম নিয়ে কিছুটা আপত্তি জানালেও পরে তারাও রাজি হয়েছে। তবে তারা মৌলিক বইগুলোর বাইরে নিজেদের মতো করে অতিরিক্ত কিছু বই রাখছে। তাহির বলেন, ‘এটা (সিন্ধুর সিদ্ধান্ত) সঠিক ও ভালো দিক। অন্য প্রদেশগুলোও চাইলে তা করতে পারবে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে এনসিসি সম্মতি জানিয়েছে।’
রফিক তাহির বলেন, পাকিস্তানের বিশেষ প্রদেশ আজাদ কাশ্মীরের গিলগিট-বালটিস্তান এই বই কিনবে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের কাছ থেকে। সময় মতো হাতে পেতে সব প্রদেশ ইতিমধ্যে নতুন বই ছাপার কাজ শুরু করে দিয়েছে। রাজধানী ইসলামাবাদের স্কুলগুলোর জন্য এই বই ছাপছে ন্যাশনাল বুক ফাউন্ডেশন।
রফিক তাহির আরও বলেন, যেসব বেসরকারি স্কুল আগস্টের পরিবর্তে গত এপ্রিল থেকে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে, ইতিমধ্যে তাদেরও এই পাঠ্যক্রমের বিষয়বস্তু জানানো হয়েছে। তবে আগস্ট থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই ধারায় সম্পৃক্ত হয়ে যেতে হবে। ব্যক্তিগত প্রকাশন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই বই ছাপানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রফিক তাহির বলেন, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির একক পাঠক্রমের খসড়া ইতিমধ্যে করা হয়েছে। ২৪ থেকে ২৮ মে এ–সংক্রান্ত একটি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে এ–সংক্রান্ত সবাই উপস্থিত থাকবেন। সেখানেই খসড়াটি চূড়ান্ত হবে। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে পাঠানো হবে।
তবে এই পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের সফলতা নিয়েও অনেকের সন্দেহ রয়েছে। খোদ দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তার সন্দেহ, এই পাঠ্যক্রম চালুর বিষয়ে দেশটির নামীদামি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত রাজি নাও হতে পারে। তবে তাঁরা সবাই বলছেন, যদি সত্যিকারে একক পাঠ্যক্রম দেশব্যাপী চালুতে সফলতা আসে, তাহলে তা হবে পাকিস্তানের জন্য একটি বিপ্লব, যা দেশকে ভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাবে। তবে সময়ই বলে দেবে, এর ফল কী হতে যাচ্ছে।