পাকিস্তানের কুররামে অস্ত্রবিরতির পরও সংঘাত চলছেই, নিহত বেড়ে ১১০
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় চলমান সংঘাতে নতুন করে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত আট দিনে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ১১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১৫১ জন।
কুররামে সংঘাতপূর্ণ পক্ষগুলোর মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি হওয়ার পরও সেখানে সহিংসতা চলছেই।
কুররাম প্রশাসন বলছে, টানা অষ্টম দিনের মতো পেশোয়ার-পারাচিনগর সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে দৈনন্দিন জীবন এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
কুররামের উপকমিশনার জাভেদউল্লাহ মেহসুদ বলেছেন, সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আফগানিস্তানসংলগ্ন খারলাচি সীমান্তেও বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। যোগাযোগব্যবস্থা ও জরুরি সেবা সীমিত হয়ে পড়েছে।
সংঘাত থামাতে চুক্তি হওয়ার পরও গতকাল বৃহস্পতিবার ৫ জন নিহত ও ৯ জন আহত হন। সব মিলে এদিন সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ১০৭ জনে দাঁড়ায়। আর আজ শুক্রবার নাগাদ তা বেড়ে ১১০ জনে দাঁড়িয়েছে।
কুররাম জেলা আফগানিস্তানের সীমান্তসংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থিত। সেখানে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ চলছে।
নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে আট দিন আগে। ২১ নভেম্বর পুলিশ পাহারায় চলা দুটি যাত্রীবাহী গাড়িবহরে চোরাগোপ্তা হামলায় ৫২ জন নিহত হওয়ার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।
সপ্তাহের শুরুর দিকে লড়াইরত পক্ষগুলোর মধ্যে ১০ দিনের অস্ত্রবিরতি হয়। তবে অবিরাম সহিংসতা চলতে থাকায় এটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
দ্য হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তানের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অঞ্চলটিতে সংঘাতে ৭৯ জন নিহত হয়েছেন। চলতি মাসের শুরুর দিকেও প্রাদেশিক কর্মকর্তারা লড়াইরত পক্ষগুলোর মধ্যে শান্তি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন সাত দিন সংঘাত বন্ধ রাখার চুক্তি হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর করা যায়নি।