সোহরাওয়ার্দী, বেনজির থেকে ইমরান, গ্রেপ্তার হয়েছেন পাকিস্তানের যেসব প্রধানমন্ত্রী
দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকেই পাকিস্তানে ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘাত। তবে ইমরান প্রথম নন, এর আগেও বিভিন্ন সময় পাকিস্তানের কয়েকজন সরকারপ্রধান গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এ তালিকায় শুরুতেই রয়েছে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নাম। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। সময়টা ১৯৬২ সালের জানুয়ারি, গ্রেপ্তার করা হয় সোহরাওয়ার্দীকে। রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। আসলে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন জানাতে অস্বীকৃতি জানানোয় সোহরাওয়ার্দীর ওপর এমন খড়্গ নেমে আসে।
পাকিস্তানের নবম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হন তিনি। জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালে একজন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। পরে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। ১৯৭৯ সালের ৪ এপ্রিল এই রায় কার্যকরও করা হয়।
জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টোও পরবর্তী সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা বেনজির পাকিস্তানের প্রথম নারী সরকারপ্রধান। ১৯৮৮ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় বসেন বেনজির। তবে সরকারপ্রধান হওয়ার আগেই ১৯৮৫ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো আটক হন বেনজির। ওই সময় তাঁকে ৯০ দিন গৃহবন্দী রাখা হয়।
পরের বছরের আগস্টে আবারও গ্রেপ্তার হন বেনজির ভুট্টো। করাচিতে স্বাধীনতা দিবসের একটি সমাবেশে সরকারের তীব্র সমালোচনা করার জেরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময় ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে আবারও বেনজিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুর্নীতির মামলায় তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দফায় দফায় কারাবরণ করতে হয়েছে বেনজিরকে। সর্বশেষ ২০০৭ সালের নভেম্বরে তাঁকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় জেনারেল পারেভজ মোশাররফকে ক্ষমতা থেকে সরাতে উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান। আয়োজন করা হয়েছিল লংমার্চ। এমনই একটি লংমার্চে যাতে বেনজির নেতৃত্ব দিতে না পারেন, সে জন্য সাত দিন তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল।
কারাবরণ করতে হয়েছে পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকেও। জেনারেল পারভেজ মোশাররফের আমলে তিনি টানা ১০ বছর বিদেশে নির্বাসিত ছিলেন। পাকিস্তানে ফিরে এলে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আবারও সৌদি আরবে নির্বাসনে পাঠানো হয়।
এটাই শেষ নয়, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আবারও গ্রেপ্তার হন নওয়াজ। দুর্নীতির মামলায় মেয়ে মরিয়ম নওয়াজসহ তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন পাকিস্তানের আদালত। একই বছরের ডিসেম্বরে আল-আজিজিয়া ইস্পাত কারখানার দুর্নীতির মামলায় নওয়াজের সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।
গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পাকিস্তানের আরেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি। সময়টা ২০১৯ সালের জুলাই। জ্বালানি খাতে দুর্নীতির দায়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ গতকাল গ্রেপ্তার হয়েছেন ইমরান খান। আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে।