ইমরান খানকে ৫ বছর নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নির্বাচনে পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। রাষ্ট্রীয় উপহার কেনাবেচায় দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার (তোশাখানা) মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে আদালতের সাজা ঘোষণার পর মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেয় ইসিপি।
তোশাখানা মামলায় গত শনিবার পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁকে এক লাখ রুপি অর্থদণ্ড করা হয়। সেদিনই লাহোরে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ইমরান।
আদালতের রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে মঙ্গলবার ইসিপি জানায়, পাকিস্তানের সংবিধানের ৬৩ অনুচ্ছেদের ১–এইচ ধারা এবং ২০১৭ সালের নির্বাচন আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ী ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হলো।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে গত বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হয় ইমরানের সরকার। এর পর থেকে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসা ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা হয়েছে।
সাজা স্থগিত ও জামিন চেয়ে আপিল
এদিকে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইমরান খানকে দুর্নীতি মামলায় দেওয়া সাজা স্থগিত এবং তাঁর জামিন চেয়ে আপিল করা হয়েছে।
ইমরান খানের আইনজীবী গওহর খান বলেন, ‘আমরা আপিল দায়ের করেছি। আমাদের আবেদন হলো নিম্ন আদালতের সাজা সাময়িক স্থগিত করা হোক। একই সঙ্গে জামিন আবেদনও করা হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) আদালত এ বিষয়ে শুনানি করবেন। আশা করছি, ইমরান খান জামিন পাবেন।’
তবে শুনানি করতে কর্তৃপক্ষ বিলম্ব করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইমরান খানের আরেক আইনজীবী মিশাল ইউসাফজাই। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পাকিস্তানে কোনো আইনের শাসন নেই। আমরা এক আদালত থেকে আরেক আদালতে দৌড়াচ্ছি।’
‘সন্ত্রাসী সেলে’ ইমরান
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাঞ্জাব প্রদেশে ঔপনিবেশিক আমলের শতাব্দী পুরোনো কুখ্যাত ‘আটক’ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে সন্ত্রাসীদের জন্য সংরক্ষিত সেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর আইনজীবী নিয়াম হায়দার পানজোথারের পক্ষ থেকে সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে করা এক আবেদনে এ অভিযোগ করেন।
ইমরান খানকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তরে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেছেন পিটিআইয়ের প্রধান আইনজীবী নিয়াম। আবেদনে তাঁকে কারাগারে প্রথম (এ) শ্রেণির সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আরজি জানানো হয়।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ৯৯ বর্গফুটের একটি কক্ষে বন্দী করে রাখা হয়েছে। সেলটি নোংরা। এর সঙ্গে সংযুক্ত শৌচাগারটিও নোংরা। এটি সাধারণত সন্ত্রাসীদের জন্য সংরক্ষিত।
তবে আদালত বলেছেন, কারাবিধি অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পাবেন ইমরান খান। তাঁর আইনজীবীদের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনারা কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করুন, আমরা সে অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা দেব।’