ইসিপিকে চ্যালেঞ্জ করে ইমরানের আবেদন হাইকোর্টে নাকচ
তোশাখানা কাণ্ডে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) আদেশ স্থগিত করতে ইমরান খানের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আজ সোমবার শুনানিতে হাইকোর্ট এ সিদ্ধান্ত দেন। খবর জিওটিভির।
গত শুক্রবার ইসিপি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে। ইসিপি বলেছে, ইমরান খান রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির তথ্য গোপন ও দুর্নীতি করেছেন। তিনি অসত্য ও ভুল বিবৃতি দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান। যদিও ইমরানের আবেদনে আপত্তি তোলে রেজিস্ট্রার কার্যালয়।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ আজ আবেদনের শুনানি শোনেন। শুনানির শুরুতে তিনি আবেদনে আপত্তির বিষয়ে জানতে চান।
ইমরান খানের আইনজীবী আলী জাফর বলেন, বায়োমেট্রিক যাচাই নিয়ে একটি আপত্তি ছিল। আপত্তির আরেকটি কারণ হলো ইসিপির সিদ্ধান্তের সত্যায়িত অনুলিপি আবেদনের সঙ্গে ছিল না।
আইনজীবী জাফর আদালতকে আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের আদেশের মাত্র দুই পৃষ্ঠা তাদের কাছে পৌঁছেছে।
বিচারপতি এ সময় মামলা নিয়ে তাড়াহুড়ো কেন, তা জানতে চান। ইমরানের আইনজীবী জাফর বলেন, সামনেই তাঁর মক্কেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে চান। নির্বাচন কমিশন আদেশে বলেছে দুর্নীতির জন্য পিটিআই প্রধানের বিচার হবে।
বিচারপতি মিনাল্লাহ পর্যবেক্ষণে বলেন, নির্বাচন কমিশন কেবল অভিযোগটি বিচারের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। যেখানে কোনো বিচারকাজই হয়নি সেখানে আদালত কোন নির্দেশ স্থগিত করবে বলে প্রশ্ন তোলেন বিচারক। রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তোলা আপত্তিগুলো সমাধান করার জন্য কৌঁসুলিকে নির্দেশ দেন বিচারক।
নির্বাচন কমিশনের সংক্ষিপ্ত আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি ইমরান খানের আইনজীবীর কাছে চান বিচারক। আইনজীবী বলেন, তাঁরা সত্যায়িত অনুলিপির জন্য আবেদন করেছেন।
বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ বলেন, তিন দিনের মধ্যে সত্যায়িত অনুলিপি ইমরান খানের আইনজীবী পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। এরপর বিচারপতি নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করতে ইমরান খানের আবেদন নাকচ করেন।
গত শনিবার রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির তথ্য গোপন করায় পার্লামেন্ট সদস্য পদ খারিজ ও নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেন ইমরান।
হাইকোর্টে করা আবেদনে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান উল্লেখ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এমন সিদ্ধান্ত জানানোর আইনগত এখতিয়ার ইসিপির নেই। তাই আদালতের কাছে তাঁর আবেদন, এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক।
গত শুক্রবার ইমরানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায় পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।
ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বিদেশ থেকে পাওয়া উপহারের তথ্য গোপন করে আইনের লঙ্ঘন করেছেন। তিনি কিছু উপহার বিক্রিও করেছেন। সংবিধানের যে ৬৩(১)(পি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাতে তিনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচন করতে পারবেন না। পাকিস্তানি আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইন অনুযায়ী তিনি পাঁচ বছর নির্বাচন করতে পারবেন না।
এর আগে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) মোহসিন নওয়াজ রানঝাসহ কয়েকজন রাজনীতিক মিলে ইমরানকে অযোগ্য ঘোষণার আবেদন করেছিলেন। তোশাখানা কেলেঙ্কারির ঘটনায় করা এই আবেদন গত ২২ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ।