পাকিস্তানকে সংকট থেকে উদ্ধারে ইমরানের রূপরেখা
পাকিস্তানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নানা সংকট চলছে। এসব সংকট থেকে দেশকে উদ্ধার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন্য একটি উদ্ধার পরিকল্পনা সামনে আনার জন্য ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একই সঙ্গে তিনি চলমান সংকট থেকে দেশকে উদ্ধারে তাঁর নিজের একটি ‘বিস্তারিত পরিকল্পনা’ (রোডম্যাপ) তুলে ধরেছেন।
রোববার সকালে লাহোরের মিনার-ই-পাকিস্তান এলাকায় বিশাল এক সমাবেশ করেছে পিটিআই। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইমরান খান। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা করেন তিনি। ইমরান খান ওই সমাবেশ থেকে দেশকে সংকট থেকে উদ্ধারে তাঁর একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে গত বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে তাঁর দলের নেতা-কর্মী ও তাঁর বিরুদ্ধে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসবের সমালোচনা করেন।
চলমান সংকট থেকে পাকিস্তানকে বাঁচাতে শাসকগোষ্ঠীর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, তা-ও জানতে চান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ইমরান খান বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, দেশকে বাঁচানোর কোনো পরিকল্পনা বা অভিপ্রায় ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর নেই।’ পিটিআই-প্রধান বলেন, ‘আমি এসব থেকে দূরে সরে যাব, যদি তারা (সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীনেরা) বলতে পারে, তাদের একটি পরিকল্পনা আছে। কিন্তু আমি জানি, পরিকল্পনা কোথায়। আদতে কোনো পরিকল্পনা নেই।’
ইমরান খানের মতে, পাকিস্তানে বর্তমানে যেসব সংকট চলছে, এসব সংকট থেকে উত্তরণের ‘সহজ কোনো পথ’ নেই। এ জন্য কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাকিস্তানের সাবেক এই সরকারপ্রধান বলেন, এসব কঠিন কঠিন সিদ্ধান্ত শুধু সরকারই নিতে পারে। কারণ, দেশের জনগণ সেই অধিকার শুধু সরকারকে দিয়েছেন।
দেশকে সংকট থেকে উদ্ধারে ১০ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনা পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধার করবে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রবাসী পাকিস্তানিদের সরাসরি পাকিস্তানে বিনিয়োগে অনুপ্রাণিত করতে হবে। এটা হলে বারবার আইএমএফের দ্বারস্থ হতে হবে না।
ইমরান খান বলেন, দল নির্বাচিত হলে তাঁর সরকার পর্যটন খাতের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেবে। সরকারের আয় বাড়ানোর জন্য খনিজ সম্পদ খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে। ইমরান বলেন, পিটিআই আবার ক্ষমতায় গেলে তাঁর সরকার রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেবে।
এ ছাড়া চীনের সহায়তায় দেশের কৃষিজ উৎপাদন বাড়াতে যা যা প্রয়োজন, করবে তাঁর সরকার। একই সঙ্গে সরকারের যে বাজেটঘাটতি আছে, তা আরও কমিয়ে আনবে। গৃহনির্মাণের যে সরকারিভাবে অর্থায়নের কর্মসূচি আছে, তা আবার শুরু করবে। বস্তিবাসীর জন্য ঘর নির্মাণ করবে। হেলথ কার্ড আবার চালু করা হবে।
দেশকে সংকট থেকে উদ্ধারে এমন আরও কিছু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন ইমরান খান। একই সঙ্গে দেশটির আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন তিনি। ইমরান খান বলেন, নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার মানে এই নয়, রাষ্ট্রের যেসব ক্ষমতা আছে, তা ব্যবহার করে ইমরান খানের হাতে হাতকড়া পরানো।