বেলুচিস্তানে সামরিক বাহিনীর বড় ধরনের অভিযান, নিহত ৫
পাকিস্তানের সংঘাতপ্রবণ বেলুচিস্তান প্রদেশে সামরিক বাহিনীর অভিযানে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। আজ শুক্রবার আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ কথা জানিয়েছে।
গত রোববার মধ্যরাতে বেলুচিস্তানজুড়ে সিরিজ হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) কয়েক ডজন যোদ্ধা। নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদেরও হামলার লক্ষ্যবস্তু করেন তাঁরা।
ওই হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪ সদস্যসহ কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হন। বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধারা ওই দিন থানায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট করেন, রেললাইন উপড়ে ফেলেন এবং তিন ডজন গাড়িতে আগুন দেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ২১ যোদ্ধা নিহত হন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে যাওয়া ২৩ পরিযায়ী শ্রমিকও আছেন। মুসাখেইল এলাকায় ট্রাক ও ভ্যান থেকে নামিয়ে পরিচয়পত্র দেখে তাঁদের একে একে হত্যা করা হয়েছিল।
ওই হামলার ঘটনা উল্লেখ করে আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ওই নৃশংস ঘটনার মূল হোতাদের দমনে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহৎ পরিসরে অভিযানে পরিচালনা করছে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো।
বেলুচিস্তান পুলিশের মহাপরিদর্শককে বদলি
এদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের ওই হামলার পর গত বুধবার বেলুচিস্তান পুলিশের মহাপরিদর্শক আবদুল খালিক শেখকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় মোয়াজ্জাম জাহ আনসারিকে বদলি করা হয়েছে।
বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের সিরিজ হামলার পর কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন, ‘দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের সামনে এগোতে হবে। এখানে দুর্বলতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।’
দুই ভাইসহ সেনা কর্মকর্তাকে অপহরণ
পাকিস্তানের দেরা ইসমাইল খান জেলায় বাবার জানাজায় অংশ নেওয়া জ্যেষ্ঠ এক সেনা কর্মকর্তাকে তাঁর দুই ভাইসহ অপহরণ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার স্থানীয় একটি মসজিদ থেকে তাঁদের অপহরণ করা হয়। পরদিন বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ।
ওই সেনা কর্মকর্তার অপহৃত হওয়া দুই ভাইয়ের একজন রাওয়ালপিন্ডির ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড সদর দপ্তরে কাজ করতেন আর অন্যজন জাতীয় তথ্যভান্ডার ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কর্মী ছিলেন।
জানা গেছে, বাবার জানাজায় অংশ নিতে গত মঙ্গলবার পৈতৃক বাড়িতে যান তিন ভাই। সেখানকার মসজিদে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাতে জড়ো হন। একপর্যায়ে কয়েক ব্যক্তি জোরপূর্বক তাঁদের মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে যান।
কুলাচি পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। কোনো গোষ্ঠী ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
আফগান সীমান্তবর্তী উপজাতি অধ্যুষিত দেরা ইসমাইল খেল এলাকাটি জঙ্গিদের নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর প্রায়ই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) দায়ী করে আসছে সরকার।