পাকিস্তান ‘দেউলিয়া’, এ জন্য ক্ষমতাচক্র, আমলাতন্ত্র, রাজনীতিবিদেরা দায়ী: প্রতিরক্ষামন্ত্রী
পাকিস্তান ইতিমধ্যে দেউলিয়া হয়ে গেছে—এমন মন্তব্য করে এ জন্য ক্ষমতাচক্র, আমলাতন্ত্র, রাজনীতিবিদসহ সবাইকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। গত শনিবার শিয়ালকোটের একটি বেসরকারি কলেজের এক অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
খাজা আসিফ বলেন, ‘পাকিস্তান ইতিমধ্যে ঋণখেলাপি হয়ে গেছে এবং আমরা এক দেউলিয়া দেশে বাস করছি। দেশের প্রায় সবাই এর জন্য দায়ী। ক্ষমতাচক্র, আমলাতন্ত্র, রাজনীতিবিদ—সবাই। এ সমস্যার সমাধান দেশের ভেতরেই আছে—আইএমএফের কাছে নয়।’
পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বলেন, দেশটিতে দামি সরকারি জমিতে যে দুটি বিলাসবহুল গলফ কোর্স আছে, সে দুটি বিক্রি করলে দেশটির এক-চতুর্থাংশ ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, গত ৩৩ বছরের তিনি পাকিস্তানের সংসদ সদস্য। এর মধ্যে ৩২ বছর ধরেই তিনি রাজনীতির অবক্ষয় দেখছেন।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট মেটাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সরকারি ব্যয় হ্রাস করে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন আসিফ।
ভয়াবহ আর্থিক সংকট মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএমএল-এন ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) জোট সরকার। এ পরিস্থিতিতে কেন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বেতন ও ভাতা কমবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
এ পরিস্থিতিতে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজসহ পিএমএলের (এন) ১২ জন পূর্ণ মন্ত্রী ও তিনজন প্রতিমন্ত্রী বিনা বেতনে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে জোট সরকারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল পিপিপি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।
চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে—৩৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান সরকার নানা চেষ্টা করে গেলেও সফলতা পাচ্ছে না। আইএমএফের শর্ত মেনে নতুন করারোপ ও পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে মূল্যস্ফীতির সূচক এতটা উঠেছে।
দ্য ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে খোলা দুধের দাম এখন প্রতি লিটার ২১০ রুপি। প্রতিদিনই বাড়ছে খাবারের দাম। এ পরিস্থিতিতে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিক্রয়কেন্দ্র খুলেছে কানাডার নামী কফি ব্র্যান্ড টিম হর্টন। দেশের দুরবস্থার মধ্যেও লাহোরে এই ব্র্যান্ডের দোকার খোলার পর থেকে সেখানে পা ফেলার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। সর্বক্ষণই ক্যাফের বাইরে দেখা যাচ্ছে কফির জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের দীর্ঘ সারি।