ইমরান খান গ্রেপ্তার হলে কমিটি পার্টির নেতৃত্ব দেবে

আজ শনিবার লাহোরে নিজ বাসভবনে রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন ইমরান আহমেদ
ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার হলে গঠিত কমিটি পার্টির নেতৃত্ব দেবে। আজ শনিবার ইসলামাবাদে আদালতে হাজির হতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এসব তথ্য জানান।

গত বছর সাবেক এই ক্রিকেটার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর জেরে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে দলের কর্মীদের বাধার মুখে পরে। এ সময় পুলিশ ও পিটিআই কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

৭০ বছর বয়সী ইমরান লাহোরে নিজ বাসভবনে বসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আমি যদি কারাগারে যাই, তাহলে কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে এ মুহূর্তে ৯৪টি মামলা আছে।

ইমরান বলেন, তাঁর জীবনের জন্য হুমকি আগের চেয়ে এখন বেশি। কোনো ধরনের প্রমাণ না দিয়েও তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সামরিক বাহিনী তাঁকে আগামী নির্বাচনে দাঁড়াতে না দিতে এমনটা করছে।

তবে এ বিষয়ে সরকার ও সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি।

ইমরানের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোতে সরকারের কোনো হাত নেই বলে সরকার আগে থেকে বলে আসছে। সামরিক বাহিনীও বলে আসছে, রাজনীতির বিষয়ে তারা নিরপেক্ষ থাকবে।

এমন প্রেক্ষাপটে ইমরান বলেন, এখন গ্রেপ্তার হওয়ার মতো কোনো কারণ তিনি দেখছেন না; কারণ, তিনি সব মামলা থেকে জামিনে আছেন। যদি কোনো মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

ইমরান বলেন, ‘সরকার এখন আমাকে হুমকি মনে করছে। এটাই কারণ।’

আগের চেয়ে তাঁর জীবন অনেক বেশি হুমকির মুখে উল্লেখ করার পাশাপাশি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলে বা তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হলে ওর প্রতিক্রিয়া নিয়ে তিনি চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি  খুব বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে এবং এটি সমগ্র পাকিস্তানজুড়েই হবে।’

‘আমি মনে করি, যারা এটি করতে চেষ্টা করছে, তারা পরিস্থিতি বুঝতে পারছে না। দুর্ভাগ্যবশত, যারা আমাকে মেরে ফেলার বা কারাগারে ঢোকানোর কথা ভাবছে, আমি মনে করি না, তারা বুঝতে পারছে পাকিস্তান এখন কোথায় দাঁড়িয়ে।’

ইমরান বলেন, পূর্ববর্তী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরে তাঁকে ক্ষমতা থেকে দূরে ঠেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল। বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরও একই পথ অনুসরণ করছেন।

তবে ইমরান এমন দাবি আগেও করেছিলেন। তখন সেনাবাহিনী তা অস্বীকার করেছিল।

ইমরান বলেন, ‘আপনি জানেন, আমাদের ৭০ থেকে ৭৫ বছরের ইতিহাসে, সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল। কিন্তু এখন সেই ভূমিকায় ভারসাম্য আনতে হবে। আপনার এখন সেই ভারসাম্য থাকতে হবে; কারণ, আগের ভারসাম্যটি আর কার্যকর নয়।’