দ্বিতীয় দফায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে জারদারি
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে আগামীকাল শনিবার। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) আসিফ আলী জারদারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শরিক দলগুলো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আসিফ আলী জারদারিকে সমর্থন দিয়েছে। জোটের শরিকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, আসিফ আলী জারদারিই হচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আসিফ আলী জারদারির প্রতিদ্বন্দ্বী পাখতুনখাওয়া মিলি আওয়ামী পার্টির প্রধান মাহমুদ খান আচাকজাই। তাঁকে সমর্থন দিচ্ছে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি)। কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থন নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এসআইসিতে যোগ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের নির্বাচিত আইনপ্রণেতারা গোপন ব্যালটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। আগামীকাল শনিবার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট, নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ এবং পাঞ্জাব, সিন্ধু, খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন।
পিপিপি ছাড়াও ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্য পাঁচ শরিক পিএমএল-এন, পিএমএল-কিউ, আইপিপি, এনপি, বিএপি ও এমকিউএম-পি আসিফ আলী জারদারিকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে পিটিআই, এসআইসি ও এমডব্লিউএম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহমুদ খান আচাকজাইকে সমর্থন দিয়েছে। তবে জেইউআই-এফ, জেআই ও বিএনপি-এম ঘোষণা দিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবে না।
জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদে ২০২ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন পিএমএল-এনের শাহবাজ শরিফ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও জাতীয় পরিষদে সমসংখ্যক ভোট পেতে পারেন আসিফ আলী জারদারি। এ ছাড়া অর্ধেকের বেশি সিনেটরের ভোট পেতে পারেন তিনি। আর পিটিআই-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাহমুদ খান আচাকজাই জাতীয় পরিষদের ৯৪টি ভোট পেতে পারেন।
চার প্রদেশের মধ্যে তিনটিতে সরকার গঠন করেছে পিএমএল-এন জোট সরকারের শরিক দলগুলো। তাই এই তিন প্রদেশ থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেতে পারেন জারদারি। একমাত্র খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে এসআইসিতে যোগ দিয়ে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করায় সেখানে অধিকাংশ ভোট পাবেন মাহমুদ খান আচাকজাই। তবে নির্বাচনে আসিফ আলী জারদারির চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে থাকবেন তিনি।
নির্বাচন পেছানোর দাবি
তবে সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ শেষ না হওয়ার উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছেন মাহমুদ খান আচাকজাই। এ দাবি জানিয়ে আজ শুক্রবার তিনি পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজাকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
সিইসিকে দেওয়া চিঠিতে মাহমুদ খান আচাকজাই বলেছেন, সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ শেষ না করেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ঠিক হবে না। কারণ, সংরক্ষিত আসনের আইনপ্রণেতাদের ছাড়াই নির্বাচন হলে সেটা হবে তাঁদের ভোটাধিকার অগ্রাহ্য করা। এটা আইন ও সংবিধানবিরোধী। তবে মাহমুদ খান আচাকজাইয়ের চিঠি নিয়ে গতকাল পর্যন্ত পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।