পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিচার স্বচ্ছ ও যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে হয়নি। আজ বুধবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মত এক আদেশে এ কথা বলেছেন। হত্যা মামলায় দোষীসাব্যস্ত হওয়ার পর ৪৪ বছর আগে তাঁর ফাঁসি হয়েছিল।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। বর্তমানে তাঁর নাতি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি দলটির নেতৃত্বে আছেন। জেনারেল জিয়াউল হকের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৯ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ইসার নেতৃত্বে ৯ সদস্যের বেঞ্চের আদেশ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ওই বিচার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘স্বচ্ছ বিচার এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয় শর্ত মানার বিষয়টি আমরা এতে পাইনি।’ এ বিষয়ে বিস্তারিত রায় পরে প্রকাশ করা হবে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিলাওয়াল ভুট্টোর বাবা আসিফ আলী জারদারি ২০১১ সালে আদালতে একটি আবেদন করেন। আবেদনে পিপিপির প্রতিষ্ঠাতাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ আদালতের মতামত চাওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে বিলাওয়াল বলেন, ‘এই কথাগুলো শোনার জন্য আমাদের পরিবার তিন প্রজন্ম ধরে অপেক্ষায় ছিল।’
প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইউসুফ নজর বলেন, এই আদেশ জিয়াউল হকের সামরিক শাসনামলে ন্যায়বিচার নিশ্চিতে চরম ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, জিয়াউল হকের ১১ বছরের একনায়ক শাসনামলে গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ, পিপিপির কর্মীদের নিপীড়ন ও কারাগারে পুরা এবং বিরোধী ও সমালোচকদের প্রকাশ্যে বেত্রাঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
ইউসুফ নজর আরও বলেন, আফগানিস্তানে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রক্সি যুদ্ধে লড়তে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে রক্ষণশীল মুসলিম জাতিটিকে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ধর্মীয় চরমপন্থীদের সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতাকে একটি নজিরবিহীন পর্যায়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিল।’