‘যেকোনো পরিস্থিতিতে লংমার্চ চলবে’
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেই আবার আন্দোলনের ঘোষণা দিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে লংমার্চ চলবে। এরপর আজ সোমবার তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) জানিয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবারের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার থেকে তাদের অসমাপ্ত লংমার্চ আবার শুরু হবে।
লাহোরের শওকত খানুম হাসপাতাল থেকে সেখানকার জামান পার্কের বাসায় গতকাল রোববার ফিরেছেন ইমরান খান। এরপর পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি সোমবার বিকেলে জানান, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে লংমার্চ।
যদিও সোমবারই লংমার্চের তারিখ তিনবার পরিবর্তন করল পিটিআই। প্রথমে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, লংমার্চ শুরু হবে মঙ্গলবার। এরপর সেই তারিখ পরিবর্তন করে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী গতকাল বলেন, বুধবার বেলা দুইটায় এই লংমার্চ শুরু হবে। কিন্তু সেই ঘোষণার ঘণ্টা না পেরুতেই শাহ মেহমুদ কুরেশি ঘোষণা দেন, লংমার্চ শুরু হবে বৃহস্পতিবার।
আগাম নির্বাচনের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর লাহোর থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশে লংমার্চ শুরু করেছিলেন ইমরান খান। এরপর গত বৃহস্পতিবার সেই লংমার্চ পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে পৌঁছালে ইমরানের ওপর হামলা হয়। এরপর লংমার্চ থেমে যায়।
আজ এ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইমরান খান। সেখানে তিনি বলেন, একমাত্র সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই তাঁর দল লংমার্চ থেকে পিছিয়ে আসবে। এ নিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তবে এবার লংমার্চে থাকছেন না ইমরান খান। তিনি বলেন, এবার লংমার্চের নেতৃত্বে থাকবেন পিটিআইয়ের মহাসচিব আসাদ ওমর ও ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশি।
এদিকে ওয়াজিরাবাদে হামলার জন্য ইমরান খান যে তিনজনের পদত্যাগ দাবি করেছেন, তাঁদের পদত্যাগের দাবিতে সোমবারও পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসিরের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডির বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে।
তদন্তের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান
ওয়াজিরাবাদে হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান খান। এ জন্য ইমরান খান নিজেই প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখেছেন।
এই চিঠিতে ইমরান খান লিখেছেন, পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ এনেছেন ইমরান খান।
এ ছাড়া ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’
এদিকে ইমরান খান যখন তদন্তের জন্য চিঠি লিখলেন, তখন ওয়াজিরাবাদের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন (এফআইআর) দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এ ছাড়া হামলার ঘটনায় অভিযোগ করতে পাঞ্জাব সরকারকে চিঠি লিখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহী লাহোরে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।