সেনাপ্রধানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলাম, বললেন ইমরান খান
পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার পেছনে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার আহমেদ বাজওয়ার পরামর্শকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধানের পরামর্শে তিনি এই দুই প্রদেশের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেনাপ্রধান তাঁর পাশে থাকেননি।
এক সাক্ষাৎকারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান এসব কথা বলেন। গতকাল রোববার একটি বেসরকারি চ্যানেলে এই সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ইমরান খান জানান, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির উপস্থিতিতে এক বৈঠকে সাবেক সেনাপ্রধান কামার আহমেদ বাজওয়া পিটিআইপ্রধান ইমরানকে বলেছিলেন, ‘যদি আপনি জাতীয় নির্বাচন চান, তাহলে পিটিআইয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দিন।’
দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গত জানুয়ারিতে ইমরানের নির্দেশে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার পিটিআই নিয়ন্ত্রিত প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
সাক্ষাৎকারে ইমরান আরও বলেন, ‘বাজওয়ার কোনো আদর্শ নেই। তিনি আমাকে একের পর এক মিথ্যা বলেছিলেন।’
গত বছরের এপ্রিল পাকিস্তানের পার্লামেন্টে উত্থাপন করা অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান ইমরান খান। এর পর থেকে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তিনি। এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আমাকে জানিয়েছিলেন, জেনারেল বাজওয়া শাহবাজ শরিফকে ক্ষমতায় দেখতে চান।’
ইমরান আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান শাসকেরা পাকিস্তান থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। এ কথা জেনারেল বাজওয়া ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানত। এরপরও জেনারেল বাজওয়া নিজের পদের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বর্তমান শাসকদের সমর্থন জুগিয়েছিলেন।
সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, ‘প্রায় বছরখানেক আগেই মধ্যপ্রাচ্যের একজন নেতা আমাকে বলেছিলেন, জেনারেল বাজওয়া শেষ পর্যন্ত আমার (ইমরান) পাশে থাকবেন না।’
আগামী জুলাইয়ে পাকিস্তানে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্ট ভেঙে দেবেন। আর ওই নির্বাচনে জিতে আবারও ক্ষমতায় বসবে পিটিআই—এমনটাই আশা করেছেন ইমরান।
এর আগে গত শুক্রবার লাহোরে দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে ইমরান বলেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি সেনাপ্রধান। সবাই সেনাপ্রধানের সিদ্ধান্ত মেনে চলে।
এ সময় ইমরান অভিযোগ করেন, তিনি যাতে ক্ষমতায় ফিরতে না পারেন, তাই সেনাবাহিনী পাকিস্তানের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত মাফিয়াদের’ পক্ষ নিয়েছে। একই সঙ্গে ইমরান দলীয় সমর্থকদের দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পাশে থাকারও আহ্বান জানান। তাঁর দাবি, ‘আমদানি করা সরকার’ সুপ্রিম কোর্টকে অসম্মান করার চেষ্টা চালাচ্ছে।