পাকিস্তানের পাঞ্জাবে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ, বিক্ষোভ থামাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি কলেজে নারী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার প্রদেশটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
পাঞ্জাবের একটি কলেজের বেজমেন্টে এক নারী শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পাঞ্জাবের প্রাদেশিক রাজধানী লাহোরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
পুলিশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং প্রাদেশিক সরকারের দাবি, তাদের কাছে কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ জানাননি। অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে বলে দাবি তাদের।
লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে শহরের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এমন অবস্থায় পাঞ্জাবের শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র বিভাগ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনটি আলাদা নোটিশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এগুলোতে ধর্ষণের ঘটনা এবং বিক্ষোভের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
আজ শুক্র ও আগামীকাল শনিবার জমায়েতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্র বিভাগ।
গতকাল রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ১৯ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সত্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা সরকার এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছে। শুধু প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষায় তারা এমনটা করেছে।’
ইনশাই নামে ১৯ বছর বয়সী আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘এটা ভুয়া খবর নয়। এটা শত ভাগ সত্য।’ ওই শিক্ষার্থী তাঁর নামের শেষ অংশ প্রকাশ করতে রাজি হননি।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই পুরুষ শিক্ষার্থী। বিক্ষোভকারীরা লাহোরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জানালা ভেঙে দিয়েছে এবং স্কুলবাস পুড়িয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজেস নামের একটি গোষ্ঠী বেসরকারিভাবে নারীদের বিভিন্ন কলেজ পরিচালনা করে থাকে। লাহোরে পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজেসের পরিচালক আরিফ চৌধুরীও গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। সত্যিই যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তবে পদত্যাগ করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ বলেছেন, যাঁরা অনলাইনে ভুয়া পোস্ট ছড়াচ্ছেন, তাঁদের সাজা দেওয়া হবে।