চার বছর পর বড় মার্কিন সামরিক সহায়তা পাচ্ছে পাকিস্তান
পাকিস্তানের কাছে ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রক্ষণাবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। পাকিস্তানকে বর্তমান এবং ভবিষ্যতে সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবিলায় সাহায্য করার অংশ হিসেবে এটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বুধবার পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। চার বছরের মধ্যে ইসলামাবাদকে ওয়াশিংটনের প্রথম বড় কোনো নিরাপত্তা সহায়তা এটা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয় যে বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসলামাবাদের ২০০ কোটি মার্কিন ডলার নিরাপত্তাসহায়তা স্থগিত করে। তখন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, পাকিস্তান আফগান তালেবান ও সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। যদিও ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
পাকিস্তানকে অস্ত্র সহায়তার বিষয়টি বুধবার কংগ্রেসকে অবহিত করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের সংস্থা ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি প্রয়োজনীয় সনদ সরবরাহ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কার্যক্রমকে টিকিয়ে রাখতে বৈদেশিক সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাবনাটি কংগ্রেসকে অবহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগী দেশ এবং দীর্ঘস্থায়ী নীতির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণ এবং টেকসই প্যাকেজ দেশটিকে সরবরাহ করা হবে। পাকিস্তানের এফ-১৬ কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের বৃহত্তর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এতে পাকিস্তান বর্তমান এবং ভবিষ্যতে সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবিলায় সক্ষম হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে পাকিস্তানকে সহায়তা করবে এবং আমরা আশা প্রকাশ করছি, এই সুবিধা নিয়ে পাকিস্তান সব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।’
কংগ্রেসকে জানানো তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি পরিকল্পনায় নতুন কোনো অস্ত্র বা গোলাবারুদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই সরঞ্জাম এবং সমর্থনের ফলে এ অঞ্চলের মৌলিক সামরিক ভারসাম্য পরিবর্তন হবে না। পেন্টাগন বলেছে, প্রস্তাবিত বিক্রয় চুক্তির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা উদ্দেশ্যগুলোকে সমর্থন করবে।
প্রসঙ্গত, বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে গত এপ্রিল মাসে বিদায় নেয় ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকার। ইমরান দাবি করেন, বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে পাকিস্তানে ‘পুতুল সরকার’ গড়া হয়েছে। এ জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন। তবে এই অভিযোগ নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।