ইমরান খানের দলে অসন্তোষ
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে ‘আজাদি মার্চ’ বা লংমার্চের ডাক দিয়েছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। লংমার্চ নিয়ে গত বুধবার দিবাগত রাতে ইসলামাবাদে পৌঁছান ইমরান খান। পরে বৃহস্পতিবার সকালে জিন্নাহ অ্যাভিনিউতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি।
ভাষণে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দিতে সরকারকে ছয় দিনের সময় বেঁধে দেন ইমরান। তবে এই কর্মসূচির সফলতা বা কার্যকারিতা নিয়ে খুব একটা খুশি নন তিনি। লংমার্চে দলীয় বিপুলসংখ্যক কর্মী–সমর্থকের সমাগম ঘটাতে ব্যর্থ হওয়ায় পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইমরান খান। কিন্তু পিটিআই নেতারা বলছেন, প্রস্তুতির জন্য তাঁদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের সাংবাদিক শাহজেব খানজাদা জানিয়েছেন, পিটিআই চেয়ারম্যান স্পষ্টতই আরও জনসমাগমের প্রত্যাশা করেছিলেন। ইমরান খান ভেবেছিলেন, সাধারণ জনগণ তাঁর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরপরই নিজেদের ইচ্ছায় বেরিয়ে আসবে।
বিশেষ করে পাঞ্জাব থেকে আসা লোকসংখ্যা নিয়ে ইমরান খানের ক্ষোভ বলে মনে করা হচ্ছে। যেখানে পিটিআই ৮৩টি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি আসন এবং ১৫৮টি প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলি আসন দখল করে আছে। লাহোর থেকে আসা নেতা–কর্মীদের সংখ্যাও ছিল কম।
করাচির নুমাইশ চৌরঙ্গিতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু আন্দোলন ছিল। অন্যদিকে সিন্ধুতে পিটিআইয়ের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডই ছিল না।
পিটিআই চেয়ারম্যান এসব শহরের সমর্থক এবং পিটিআই নেতাদের দুর্বল অংশগ্রহণে ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। নেতাদের কাছে তিনি জানতে চেয়েছেন, লাহোরে একটি বড় রাজনৈতিক সমাবেশের আগমুহূর্তে মিছিলে এত কম উপস্থিতি ছিল কেন?
পিটিআই নেতাদের কাছে ইমরান খানের ক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে, তাঁরা জানান লংমার্চ–সম্পর্কিত বিবৃতি এবং বাস্তবতার মধ্যে ব্যাপক ফারাক ছিল। ইমরানের ক্ষোভের জবাবে তাঁরা এটিই বলেছিলেন।
পিটিআই নেতারা যুক্তি দিয়েছিলেন যে চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি। নেতারা জানান, তাঁরা ইমরান খানকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি লংমার্চের জন্য ২৫ থেকে ২৯ মে সময় বেঁধে দেন। নেতারা বলছেন, ২৫ মে তারিখ নির্ধারণ করা ছিল ভুল। কারণ, এই সময়ের মধ্যে তাঁদের পরিবহন এবং আনুষঙ্গিক সহায়তার বিষয়ে পরিকল্পনা করতে হবে—মানুষজন কীভাবে সেখানে যাবে? বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সমর্থকেরা কোথায় থাকবেন? খাবারদাবারের ব্যবস্থা কী হবে ইত্যাদি।
নেতারা বলছেন, তাঁরা ইমরান খানকে কয়েক দিন সময় পিছিয়ে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু পিটিআই চেয়ারম্যান সরকারকে হকচকিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি নিজে উদ্বিগ্ন ছিলেন যে সময় পিছিয়ে দিলে সরকার লংমার্চ বন্ধের পরিকল্পনা করতে সক্ষম হবে।
পিটিআই নেতারা জানান, তাঁরা ইমরান খানকে বলেছিলেন পিটিআইয়ের একজন সক্রিয় সমর্থক সাধারণত নিজে থেকেই জলসা এবং বিক্ষোভে আসেন, কিন্তু সতর্কতা ছিল যে খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে সমর্থকদের ছাড়া, পিটিআইয়ের অন্য কোথাও এমন সমর্থক নেই, যারা পুলিশ বা কাঁদানে গ্যাস বা হামলা উপেক্ষা করার সাহস করবে এবং ইসলামাবাদে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।
২০১৪ সালেও তাহিরুল কাদরীর কর্মীরা না থাকলে অবস্থান কর্মসূচি টিকত না। তাহিরুল কাদরী না থাকলে পিটিআই সমর্থকেরা সারা দিন অবস্থান কর্মসূচিতে না কাটিয়ে বাড়ি ফিরতেন।
পিটিআইয়ের এক সূত্র জানায়, তাঁরা ইমরান খানকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে একটি সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া লংমার্চ করা ঠিক হবে না এবং অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা পিটিআইয়ের জন্য আরও সমস্যা তৈরি করবে। তাঁরা ইমরানকে এ–ও বলেছিলেন যে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ছাড়াই রাজধানীতে আসার হুমকি অনেক বেশি শক্তিশালী কৌশল হবে।
ইমরানের পরিকল্পনার বিপরীতে তাঁর দলের অন্যরা আশা করেছিলেন যে অঘোষিত লংমার্চের হুমকি জোট এবং সরকার উভয়ের ওপর চাপ তৈরি করবে। কিন্তু ইমরান খান আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে লংমার্চে এমন জনসমুদ্র হবে যে ইসলামাবাদে পৌঁছানোর আগেই সরকার নড়ে উঠবে। তিনি ভেবেছিলেন পুলিশ এত বিপুলসংখ্যক মানুষের স্রোত থামাতে ব্যর্থ হবে এবং সরকারও জনশক্তির এমন প্রদর্শনের পর টিকতে পারবে না।
এখন পিটিআই চেয়ারম্যান তাঁর এমএনএ এবং এমপিএদের ওপর অসন্তুষ্ট এই ভেবে যে তাঁরা জনগণকে রাজপথে বের করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে পিটিআইয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্র জিও নিউজকে জানিয়েছেন, নেতারা ইমরানের ঘোষিত ছয় দিনের আলটিমেটামে অসন্তুষ্ট। তাঁদের বক্তব্য—দুই দিন আগে যেসব মানুষ রাজপথে বের হননি, ছয় দিন পর তাঁরা কেন বের হবেন? কোনোভাবে মানুষেকে রাস্তায় নামানোর ব্যবস্থা করা গেলেও, সরকারের পদত্যাগের জন্য দীর্ঘ সময় অবস্থানের জন্য তাঁরা মানুষ কোথা থেকে পাবেন?
বৃহস্পতিবার ইসলামাদের নবম অ্যাভিনিউতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে সরকারকে ছয় দিনের সময় বেঁধে দেন ইমরান খান। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দাবি মানা হলে ‘গোটা জাতিকে নিয়ে’ তিনি আবার রাজধানীতে ফিরে আসবেন।
সেদিন ইমরান খান বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সরকার পার্লামেন্ট ভেঙে না দেওয়া এবং নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান করব। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় আমি যা দেখলাম, তারা (সরকার) দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে চায়।’
পিটিআই সূত্রমতে, এই মুহূর্তে ইমরান খান প্রথাগত নির্বাচনী রাজনীতিতে ভালো পারদর্শী রাজনীতিবিদদের পরিবর্তে শুধু তাঁর কাছের কিছু লোকের কথাই শুনছেন বলে মনে হচ্ছে।
জিওর সাংবাদিক শাহজেব খানজাদার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পিটিআইয়ের ভেতরের গল্পটি এই মুহূর্তে একটি সিরিজ হতাশার গল্প বলে মনে হচ্ছে। ঘোষণা দেওয়ার পরও কেন অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়নি, এ নিয়েও দলের সমর্থকেরা বিরক্ত। ইসলামাবাদে দলীয় লোকজনের না পৌঁছানো বা নিজেদের শহরে বিক্ষোভ করতে না পারায় দলীয় নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ ইমরান।
জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে গত ৯ এপ্রিল ক্ষমতা হারানোর পর দেশজুড়ে একের পর এক সমাবেশ করেন ইমরান খান। সর্বশেষ ইসলামাবাদ অভিমুখে ২৫ মে ‘আজাদি মার্চ’-এর ডাক দেন তিনি। তিন মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আদায়েরও অঙ্গীকার করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
যদিও কবে নাগাদ নির্বাচন দেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। তারা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আইনে সংস্কার আনার কথা বলছে। সম্প্রতি লন্ডনে পিএমএল-এন সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সেখানে নির্বাচন পেছানোর ইঙ্গিত দেন নওয়াজ।এখন পিটিআই চেয়ারম্যান তাঁর এমএনএ এবং এমপিএদের ওপর অসন্তুষ্ট এই ভেবে যে তাঁরা জনগণকে রাজপথে বের করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে পিটিআইয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্র জিও নিউজকে জানিয়েছেন, নেতারা ইমরানের ঘোষিত ছয় দিনের আলটিমেটামে অসন্তুষ্ট। তাঁদের বক্তব্য—দুই দিন আগে যেসব মানুষ রাজপথে বের হননি, ছয় দিন পর তাঁরা কেন বের হবেন? কোনোভাবে মানুষেকে রাস্তায় নামানোর ব্যবস্থা করা গেলেও, সরকারের পদত্যাগের জন্য দীর্ঘ সময় অবস্থানের জন্য তাঁরা মানুষ কোথা থেকে পাবেন?
বৃহস্পতিবার ইসলামাদের নবম অ্যাভিনিউতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে সরকারকে ছয় দিনের সময় বেঁধে দেন ইমরান খান। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দাবি মানা হলে ‘গোটা জাতিকে নিয়ে’ তিনি আবার রাজধানীতে ফিরে আসবেন।
সেদিন ইমরান খান বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সরকার পার্লামেন্ট ভেঙে না দেওয়া এবং নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান করব। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় আমি যা দেখলাম, তারা (সরকার) দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে চায়।’
পিটিআই সূত্রমতে, এই মুহূর্তে ইমরান খান প্রথাগত নির্বাচনী রাজনীতিতে ভালো পারদর্শী রাজনীতিবিদদের পরিবর্তে শুধু তাঁর কাছের কিছু লোকের কথাই শুনছেন বলে মনে হচ্ছে।
জিওর সাংবাদিক শাহজেব খানজাদার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পিটিআইয়ের ভেতরের গল্পটি এই মুহূর্তে একটি সিরিজ হতাশার গল্প বলে মনে হচ্ছে। ঘোষণা দেওয়ার পরও কেন অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়নি, এ নিয়েও দলের সমর্থকেরা বিরক্ত। ইসলামাবাদে দলীয় লোকজনের না পৌঁছানো বা নিজেদের শহরে বিক্ষোভ করতে না পারায় দলীয় নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ ইমরান।
জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে গত ৯ এপ্রিল ক্ষমতা হারানোর পর দেশজুড়ে একের পর এক সমাবেশ করেন ইমরান খান। সর্বশেষ ইসলামাবাদ অভিমুখে ২৫ মে ‘আজাদি মার্চ’-এর ডাক দেন তিনি। তিন মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আদায়েরও অঙ্গীকার করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
যদিও কবে নাগাদ নির্বাচন দেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। তারা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আইনে সংস্কার আনার কথা বলছে। সম্প্রতি লন্ডনে পিএমএল-এন সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সেখানে নির্বাচন পেছানোর ইঙ্গিত দেন নওয়াজ।