বিশ্বে চলতি বছর একের পর এক মাস উষ্ণতম হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। গত মাসটিও ছিল বিশ্বে এযাবৎকালে রেকর্ড হওয়া সর্বোচ্চ উষ্ণ অক্টোবর মাস। এতে ধারণা করা হচ্ছে, চলতি ২০২৩ সালটি ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হতে যাচ্ছে।
আজ বুধবার ইউরোপভিত্তিক জলবায়ুবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (সি৩এস) এক প্রতিবেদনে এমন আভাস দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেভাবে অস্বাভাবিক হারে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে, তাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে বিশ্বনেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করাটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগামী মাসে দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলন সামনে রেখে এ চাপ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা।
কোপারনিকাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর কিছু অংশে খরা দেখা দিয়েছিল। আবার ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিশ্বের অনেক জায়গা স্বাভাবিকের চেয়ে আর্দ্র ছিল। অক্টোবর মাসে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রাও এযাবৎকালে অক্টোবরে রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রার তুলনায় সর্বোচ্চ ছিল।
কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের উপপরিচালক সামান্থা বারগেস বলেন, ‘২০২৩ সালের অক্টোবর মাসটিতে তাপমাত্রায় অস্বাভাবিক রকমের অসংগতি দেখা গেছে। এখন তাপমাত্রা শিল্প–পূর্ব সময়ের গড় তাপমাত্রার তুলনায় ১ দশমিক ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
কোপারনিকাসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শিল্প–পূর্ব সময়ে অক্টোবর মাসের গড় তাপমাত্রার তুলনায় গত অক্টোবর মাসটি ১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ ছিল।
১৯৪০ সাল থেকে বিশ্বে যে পরিমাণ গড় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তার তুলনায় গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ। ১৮৫০-১৯০০ সাল পর্যন্ত যে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তার তুলনায় এই তাপমাত্রা ১ দশমিক ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বে যত কার্বন নির্গত হয়, তার বেশির ভাগই হয় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। চলতি দশকে কার্বন নিঃসরণের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রয়োজন থাকলেও তা হয়নি। উল্টো কার্বন নিঃসরণ বেড়েই চলেছে।
৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কপ–২৮ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে বিশ্বনেতারা অংশ নেবেন।