লেবাননে বিক্ষোভকারীদের ওপর বন্দুকধারীদের গুলি, নিহত ৫
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এক বিক্ষোভ মিছিলে অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীর হামলায় ৫ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত বছর বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় চলমান তদন্ত কার্যক্রমে নেতৃত্বদানকারী বিচারকের অপসারণের দাবিতে হিজবুল্লাহ ও এর প্রধান মিত্র আমাল মুভমেন্ট এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান–সমর্থিত সংগঠন হিজবুল্লাহ ও আমাল মুভমেন্টের শত শত সমর্থক আজ বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বৈরুতের প্যালেস অব জাস্টিসের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় অজ্ঞাত এক স্থান থেকে তাঁদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। তখন বিক্ষোভকারী ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকেরা আড়ালে চলে যান।
লেবাননের স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত খবরে দেখা গেছে, একজন মুখোশধারী ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে সড়ক বিভাজকের পেছন থেকে গুলি করছেন। একই সময় পার্শ্ববর্তী একটি ভবন থেকে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে লেবানন রেডক্রস। এ ছাড়া ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি।
গত বছরের আগস্টে বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার তদন্ত করছেন লেবাননের জনপ্রিয় বিচারক তারেক বিতার। কিন্তু হিজবুল্লাহ তাঁর বিরোধিতা করে আসছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই লেবাননের শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং গোয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন তারেক বিতার। এ ছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আমাল পার্টির শীর্ষ নেতা আলি হাসান খলিলির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন তিনি। লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নোহাদ মাচনুকের বিরুদ্ধেও তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
তারেক বিতার বৈরুত ক্রিমিনাল কোর্টের প্রধান বিচারক। তিনি বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত দ্বিতীয় কর্মকর্তা। এর আগে সাবেক দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ায় প্রথম তদন্ত কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়।
তারেক বিতার দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাঁকেও অপসারণে কয়েক দফা পিটিশন দাখিল করা হয়। তবে সেগুলো খারিজ হয়ে যায়। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ওই ঘটনার চলমান বিচার কার্যক্রমের সমালোচনা করে এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছেন।