ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বলল জাতিসংঘ
পরমাণু চুক্তির সঙ্গে সংগতি রেখে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর পাশাপাশি ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার প্রতিশ্রুতিতে ফিরে যেতে বলেছে।
গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণবিষয়ক জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো এ আহ্বান জানান।
রোজমেরি বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রকে পরিকল্পনায় বর্ণিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার বা ছাড় দেওয়ার জন্য আবেদন করছি এবং ইরানের সঙ্গে তেলের বাণিজ্যসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা মওকুফের মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে রোজমেরি আরও বলেন, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বেসামরিক পারমাণবিক-সম্পর্কিত কার্যকলাপের বিষয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মওকুফ করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
ইরানের সঙ্গে হওয়া ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বিশ্বশক্তিগুলো অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আলোচনায় ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য বেড়েই চলেছে। ইরানের সঙ্গে হওয়া এই পারমাণবিক চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। চুক্তি মোতাবেক ইরান পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়েছিল। শর্ত মেনে চলার বদলে ইরানের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
তবে ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে।
রোজমেরি ডিকার্লো ইরানকে পরিকল্পনার অধীনে তাদের পরমাণু-সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এমন পদক্ষেপগুলো থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এক যৌথ বিবৃতিতে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পাশাপাশি রাশিয়া ও চীন বলেছে, ইরানের জন্য এখন একটি চুক্তি করার কূটনৈতিক দরজা খোলা রয়েছে। ইরানকে জনগণ ও জাতির স্বার্থে চুক্তি বাতিল বা একটি ন্যায্য চুক্তির বিষয়টি বেছে নিতে হবে।
জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত মাজিদ তখত রাভাঞ্চি বলেছেন, পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরতে তাঁর দেশ কোনো পূর্বশর্ত বা নতুন শর্ত আরোপ করছে না। ওয়াশিংটন চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বদলে ফেলতে প্রস্তুত তাঁরা।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ইরান যদি আগের শর্তে ফিরে যেতে সম্মত হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রও শর্তে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।