গাজায় নাসের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সমাহিত হলেন মৃত রোগীরা, আটকে পড়াদের সরানোর চেষ্টা

আল নাসের হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের অবস্থান, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ছবি: রয়টার্স

মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো গাজা উপত্যকার আল নাসের হাসপাতালে আটকে পড়া ১৪০ জনের মতো রোগীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার আশা করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, চিকিৎসাকর্মীরা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ১৩ জন রোগীকে কবর দিয়েছেন। ওই হাসপাতালে বিদ্যুৎ ও অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় তাঁরা মারা গেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, গত সপ্তাহে খান ইউনিস এলাকার আল নাসের হাসপাতালটি ইসরায়েলি বাহিনী দখলে নেওয়ার পর সেখানকার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনে নিযুক্ত ডব্লিউএইচও-এর শীর্ষ কর্মকর্তার আয়াদিল সাপারবেকভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হাসপাতাল থেকে আটকে পড়া রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সহযোগীরা গত বুধবার পর্যন্ত তিন দফায় অভিযান চালিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ৫১ জন রোগীকে দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সাপারবেকভ বলেন, ‘ডব্লিউএইচও নাসের হাসপাতাল থেকে গুরুতর অসুস্থ এবং গুরুতর আহত রোগীদের রাফাতে গড়ে তোলা অস্থায়ী হাসপাতালসহ দক্ষিণের অন্যান্য হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। যদিও এ অভিযান অত্যন্ত কঠিন ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, হাসপাতাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এরপর তারা হাসপাতালের আশপাশে অবস্থান নেয়। তারা হাসপাতালে কারও ঢোকা ও বের হওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে আবারও তারা সেখানে হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বক্তব্য জানা যায়নি।

সাড়ে চার মাস আগে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার আগে সেখানে ৩৪টি হাসপাতাল কার্যক্রম চালাত। এখন এগুলোর মধ্যে মাত্র ১৩টি এখন সক্রিয় আছে এবং সেখানে আংশিকভাবে কার্যক্রম চলছে।

যুদ্ধের কারণে গাজা উপত্যকার মানুষেরা অত্যন্ত খাদ্যসংকটে আছে, সেখানে রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। ত্রাণ কর্মকর্তারা এ ধরনের পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।

গাজার বাসিন্দাদের অনেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা মিসর সীমান্তবর্তী রাফা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস নেতারা নিজেদের কার্যক্রম চালাতে গাজার হাসপাতালগুলোকে ব্যবহার করে থাকে। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এ অভিযোগ অস্বীকার করে থাকে। তাদের দাবি, গাজার স্বাস্থ্য সুরক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে হামাস এমন অজুহাত দেখিয়েছে।