ইরানে আরও দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

শনিবার সকালে মোহাম্মদ মেহদি কারামি ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেইনি নামে দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া সিএনএন

ইরানে আরও দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তাঁরা হলেন, মোহাম্মদ মেহদি কারামি ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেইনি। আজ শনিবার সকালে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এ নিয়ে চার বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। পুলিশের হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সেপ্টেম্বরে এ বিক্ষোভ শুরু হয়।

কারামি ও হোসেইনির বিরুদ্ধে গত বছর রাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সৈয়দ রুহোল্লাহ আজামিয়ান নামের ইরানের আধা সামরিক বাহিনী বাসিজের একজন সদস্যকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাঁদের। গত বছরের ৩ নভেম্বর কারাজ শহরে রুহোল্লাহ আজামিয়ান নিহত হন।

তবে কারামির আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেই আগাসি শনিবার টুইটারে বলেছেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন কারামি। তবে তাঁকে সে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া মামলা লড়তে আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি না পাওয়ায় গত বুধবার থেকে কারামি আমরণ অনশন করছিলেন।  

কারামির বয়স ২১ বছর। তিনি একজন চ্যাম্পিয়ন কারাতে খেলোয়াড় ছিলেন। তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর গত ডিসেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়ে আকুতি জানান তাঁর মা-বাবা। আকুতি জানিয়ে কারামির বাবা বলেন, ‘দয়া করে আমার ছেলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ তুলে নিন।’

ইরানের সরকারি হিসাবে, ৪১ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএচআর) হিসাবে, ইরানে চলমান বিক্ষোভ জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ১০০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে অথবা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, এমন অপরাধের দায় তোলা হয়েছে।

১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে মাসা আমিনি (২২) নামের এক তরুণীর মৃত্যু হয়। হিজাব নীতি না মানার অভিযোগে এর তিন দিন আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পর থেকে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দমনে সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ করছে ইরান সরকার।  

সম্পাদক আটক

এদিকে ইরানের স্বাধীন সংবাদপত্র ইতেমাদ-এ রাজনীতিবিষয়ক সম্পাদক মেহদি বেয়েককে আটক করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে আটক করা হয় বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে ইতেমাদ। বেয়েককে ইরানের তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ধরে নিয়ে গেছেন বলে গত শুক্রবার জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী জাহরা বেয়েক।

ইরানের শাসনব্যবস্থার যাঁরা সংস্কার চান, এমন ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্বকারী সংবাদমাধ্যম ইরানওয়্যার জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভ থেকে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের বেশ কয়েকজনের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তা প্রকাশ করেছিলেন বেয়েক। এর জেরেই বেয়েককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।