হামাস কি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে
ফিলিস্তিনের গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আশা, চার দিনের যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধ বন্ধের পথ তৈরি করে দেবে। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনা শুরু হয়েছে, যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?
জল, স্থল ও আকাশপথে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক হামলায় হামাসের যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ধ্বংসযজ্ঞ দেখে তা সহজেই অনুমেয়। উদাহরণ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী যে দাবি করেছিল, তা আমলে নিলে একটা আন্দাজ পাওয়া যায়।
ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার গাজায় হামাসের তিন শতাধিক অবস্থান লক্ষ্য করে তারা বোমা হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে হামাসের সামরিক ঘাঁটির পাশাপাশি সুড়ঙ্গ, অস্ত্রাগার, অস্ত্র তৈরির কারখানা ও ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিও ছিল।
সামরিক সূত্রে জানা যায়, উত্তর গাজায় হামাসের সব সামরিক ঘাঁটি ও সেনা ইউনিট ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। শেখ ইজলিন, শাতি শরণার্থীশিবির, বেইত হানুম, রিমাল, জেইতুন, জাবালিয়া ও বেইত লাহিয়ার মতো এলাকাগুলো থেকে হামাস যোদ্ধাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তর গাজার অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে হামাস। অসংখ্য যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
সামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও অসংখ্য যোদ্ধা হারানো হামাস কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিষয়টি খুব জটিল। এ জন্য হামাসকে নিয়ন্ত্রণ হারানো এলাকা যেমন পুনরুদ্ধার করতে হবে, তেমনি ব্যাপক সামরিক ক্ষয়ক্ষতিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা–ও পূরণ করতে হবে।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর গাজায় হামাসের অন্তত ১০টি ব্যাটালিয়নে যোদ্ধার সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। অনেক কমান্ডার নিহত হয়েছেন। জানা যায়, এসব ব্যাটালিয়নে আনুমানিক ১৪০ কোম্পানি–যোদ্ধা ছিলেন। একটি কোম্পানিতে ১০০ পর্যন্ত যোদ্ধা থাকেন।
গত ৭ অক্টোবরের আগে হামাসের যোদ্ধা ছিল আনুমানিক ৩০ হাজার। ইসরায়েলে আকস্মিক ওই হামলা চালাতে গিয়ে কিছু নিহত হন। কেউ কেউ আটক হয়েছেন।
সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, উত্তর গাজায় নতুন করে যোদ্ধা মোতায়েন ছাড়া হামাসের হাতে বিকল্প নেই। যুদ্ধবিরতি চললেও ইসরায়েলি বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের ঘিরে রাখবে। এ সময় হামাস তাদের সেনা ইউনিট কিছুটা এদিক–সেদিক করতে পারলেও পূর্বের অবস্থায় ফেরা অসম্ভব। এদিকে ইসরায়েল বলেছে, যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় আবার হামলা চালাবে তারা। ফলে মনে হচ্ছে, হামাস সহজে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।