নিহতের সংখ্যা কমাল ইরান, হামলার জন্য দায়ী করল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে
ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা পর্যালোচনা করা হয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, বিস্ফোরণে অন্তত ৯৫ জনের প্রাণ গেছে। এর আগে দেশটির সরকার জানিয়েছিল, নিহত মানুষের সংখ্যা ১০৩।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবারের জোড়া হামলার পেছনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান কাশেম সোলাইমানির সমাধিস্থলের কাছে গতকাল একটি বিস্ফোরণ হয়। কাশেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শত শত মানুষ হেঁটে তাঁর সমাধিস্থলের দিকে যাচ্ছিল।
আরেকটি বিস্ফোরণ হয় কেরমানে অবস্থিত সাহেব আল-জামান মসজিদে জমায়েত মানুষের ওপর। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সড়কে মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যাচ্ছে।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এর ‘কড়া জবাব’ দেওয়া হবে।
তবে বিস্ফোরণের পর এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। গত ৪২ বছরের মধ্যে ইরানে এটাকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলা হচ্ছে।
জোড়া বিস্ফোরণের পর ইরান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নিহত মানুষের সংখ্যা ১০৩। পরে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাহরাম আয়নোল্লাহি জানান, নিহত হয়েছেন ৯৫ জন। তিনি বলেন, কয়েকজনের নাম ‘ভুলবশত’ দুবার লেখা হওয়ায় সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল।
আয়াতুল্লা আলী খামেনির পর দেশটির ‘সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি’ মনে করা হতো কাশেম সোলাইমানিকে। ২০২০ সালে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দিকে
ইরানের প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক সহযোগী মোহাম্মদ জামসিদি এক এক্স বার্তায় লেখেন, ‘ওয়াশিংটন বলেছে, ইরানের কেরমানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ভূমিকা নেই। সত্যিই তা-ই? যে অপকর্মের জন্য তুমি অন্যকে দোষারোপ করো, সেটা তোমার মাথায় আগে ঘুরপাক খায়।’
মোহাম্মদ জামসিদি আরও লেখেন, ‘কোনো ভুল নেই। এ হামলার দায়ভার যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদি শাসকদের (ইসরায়েল)। এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাস একটি হাতিয়ারমাত্র।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিজেদের ও মিত্র ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার কথা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই জড়িত নয়...এই বিস্ফোরণের পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে—এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।’
যদিও ইসরায়েলর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।