হামলার সম্মতির মাঝেও যুদ্ধবিরতির সুযোগ রেখেছেন নেতানিয়াহু
রাফায় হামলার পরিকল্পনায় সম্মতি দেওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার সুযোগের পথ খোলা রেখেছেন নেতানিয়াহু। হামাসের সঙ্গে জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য কাতারে আরেক দফা প্রতিনিধিদল পাঠাতে সম্মত হয়েছেন তিনি।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পাঁচ মাস পর নেতানিয়াহু রাফা শহরটিতে হামলার অনুমোদন দিলেন। তবে ইসরায়েলের বৈশ্বিক মিত্র ও সমালোচকেরা তাঁকে এ হামলা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা, এতে বেসামরিক লোকজনের মৃত্যু আরও বাড়বে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩১ হাজার ৫৫৩ জন নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েল বলছে, হামাসের শেষ আশ্রয়স্থল রাফা তারা তছনছ করে দেবে।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, রাফা নিয়ে ইসরায়েলের পরিকল্পনা এখনো তাঁরা দেখেননি। নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, জিম্মি মুক্তি নিয়ে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি এখনো তাঁদের আয়ত্তের মধ্যে আছে। তবে এ নিয়ে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে ১০০ যাবজ্জীবন পাওয়া ফিলিস্তিনির মুক্তির বদলে তারা ইসরায়েলি কিছু জিম্মিকে ছাড়তে সম্মতির কথা রয়েছে। নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে হামাসের দাবিকে অবাস্তব বললেও তারা দোহায় প্রতিনিধি পাঠাতে সম্মত হয়েছে।
ইসরায়েলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের সেনারা রাফায় হামলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও করেছে তারা। তবে এর জন্য কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কোনো প্রস্তুতিও তাদের মধ্যে দেখা যায়নি।
ভিয়েনা সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত শুক্রবার বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি-সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে এর ফাঁকফোকর পূরণে ওয়াশিংটন মিত্রদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। হামাসের প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘হামাস একটি পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে। এর বিস্তারিত দিক আমি তুলে ধরতে পারছি না। কিন্তু একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আমরা ইসরায়েল, কাতার ও মিসরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে বেশ কিছু ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাল রোববার ওই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। তবে তা সোমবার পর্যন্ত গড়াতে পারে।
হামলা অব্যাহত
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতির মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরও হামলার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি ভবনের ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই শিশু।