হিজবুল্লাহকে সমর্থন দেবেন ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট
ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তাঁর দেশ লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে সমর্থন দেবে। গত সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। গত শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক নীতি নিয়ে করা অন্যতম মন্তব্য ছিল এটি। বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলা চালানোয় ইসরায়েলের নিন্দা জানান তিনি।
হিজবুল্লাহকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেয় তেহরান। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে গত শতকের আশির দশকে হিজবুল্লাহ গড়ে তোলে ইরান। ওই সময়ে লেবাননে গৃহযুদ্ধ চলছিল, দেশটির দক্ষিণাঞ্চল দখল করে রেখেছিল ইসরায়েল। পেজেশকিয়ান বলেন, মিত্রদের প্রতিরোধে সমর্থন করা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মৌলিক নীতি। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ গাজায় ইসরায়েলের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে পারবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি সেনা ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘাতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই অবস্থায় ওই অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে সোমবার সকালে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কনানি বলেন, লেবানিজদের সহায়তা করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না ইরান। তাই এই অঞ্চলে কোনো ধরনের তৎপরতা চালানোর আগে (বিশেষ করে লেবাননে) এর পরিণতি সম্পর্কে ইসরায়েলের সতর্ক থাকা উচিত।
গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর ইরানে আগাম নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছিল। নির্বাচনে কট্টর রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত সাইদ জালিলিকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সংস্কারবাদী রাজনীতিক মাসুদ পেজেশকিয়ান। নির্বাচনে জয়ের পর গত শনিবার পেজেশকিয়ানকে অভিনন্দন জানান হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। আঞ্চলিক ‘প্রতিরোধ’ গোষ্ঠীগুলোর ‘শক্তিশালী’ সমর্থক হিসেবে তেহরানের ভূমিকার ওপর জোর দেন তিনি।
এদিকে ইরানের প্রধান দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানার আয়তন বাড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুজন সামরিক গবেষক। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবির ভিত্তিতে তাঁরা এই দাবি করেছেন। ইরানের তিনজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও বিষয়টি তাদের নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলছেন, রাশিয়াকে সরবরাহ করার জন্য এসব ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। ২০২২ সালে এই বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে একটি চুক্তি করে ইরান। ধারণা করা হচ্ছে, এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। অপরদিকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী ও লেবাননের হিজবুল্লাহকেও এসব ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে তেহরান।