তুরস্ক বিদ্রোহীদের সহায়তা করছে, উৎখাত হওয়ার আগে ইরানকে বলেছিলেন আসাদ
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক দিন আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে উৎখাত করতে তুরস্ক সিরিয়ার সুন্নি বিদ্রোহীদের সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে।
এ সপ্তাহে ইরানের দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন।
৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করলে মস্কো পালিয়ে যান আসাদ। রুশ সরকার তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে আসাদ বাহিনীকে সমর্থন দিয়ে গেছে ইরান। আসাদের উৎখাত ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাবের ওপর বড় ধাক্কা বলে বিবেচনা করা হয়।
হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্রোহী যোদ্ধারা যখন একের পর এক শহর দখল করে রাজধানীর দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন, সে সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠক করেন আসাদ। ২ ডিসেম্বর দামেস্কে ওই বৈঠক হয়েছিল।
ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে আসাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তাঁকে উৎখাত করতে তুরস্কের প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে।
আরাগচি আসাদকে ইরানের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছিলেন এবং বিষয়টি নিয়ে আঙ্কারার সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
পরদিন আরাগচি তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বিদ্রোহীদের (সিরিয়ার) প্রতি আঙ্কারার সমর্থন নিয়ে তেহরানের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
দ্বিতীয় ইরানি কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই বৈঠক ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের অ্যাজেন্ডাগুলোর সঙ্গে তুরস্কের সম্পৃক্ততা নিয়ে ইরান অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল এবং আসাদের উদ্বেগের কথাও জানিয়েছিল।’
বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিদান এই সংকটের জন্য আসাদকে দায়ী করেছিলেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। ফিদান জোর দিয়ে বলেছিলেন, একটি সত্যিকারের শান্তি আলোচনা শুরু করতে আসাদের ব্যর্থতা এবং বছরের পর বছর তাঁর নিপীড়নমূলক শাসন এই যুদ্ধের মূল কারণ।
ইরানের দুই কর্মকর্তার এই দাবি অবশ্য পুরোপুরি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। সূত্রটি বলেছে, ফিদান ঠিক এভাবে কথা বলেননি। সূত্রটি এই দাবিও করে, আরাগচি আসাদের কোনো বার্তা তুরস্কের কাছে বয়ে আনেননি। ওই সূত্র এ নিয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেনি।