ইসরায়েলের হামলা নয় বলে ইরান কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে
ইরানের ইস্পাহান শহরে বিস্ফোরণের ঘটনাকে বিভিন্ন সূত্র ইসরায়েলি হামলা বলে উল্লেখ করলেও ইরান সেই বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে। এটি বাইরের দেশের হামলা নয় বলে ইতিমধ্যে ইরানের গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে। এ অবস্থায় তেহরান ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পাল্টা জবাব দেবে না বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের এমন অবস্থানের পর আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা অনেকটা কেটে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সীমিত আকারে হামলা এবং ইরানের নিরুত্তাপ জবাব—সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, কূটনৈতিক উদ্যোগ সফল হয়েছে। গত শনিবার ইসরায়েলে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করছিলেন কূটনীতিকেরা।
ইরানের গণমাধ্যম ও কর্মকর্তারা ওই ঘটনাকে ছোট আকারের বিস্ফোরণ বলে বর্ণনা করছেন। তাঁরা বলছেন, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েনের পর ইস্পাহান নগরে তিনটি ড্রোন আঘাত হানে। তাঁরা ওই ঘটনাকে ইসরায়েলের বদলে বরং ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ হামলা বলে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে ইরানের পক্ষ থেকে পাল্টা জবাব না দেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
ইরানের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এ ঘটনার জন্য তাদের ইসরায়েলে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই।
কর্মকর্তারা বলেন, ‘এ ঘটনায় বিদেশি সূত্রের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। আমরা বিদেশি হামলার বিষয়ে কোনো তথ্য পাইনি। হামলার চেয়ে অনুপ্রবেশের বিষয়টি বেশি আলোচনায় আসছে।’
ইসরায়েল এ ঘটনা সম্পর্কে এখনো কিছু বলেনি। তবে তারা আগে থেকেই বলে আসছে, তারা ইরানের গত শনিবারের হামলার জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েল হামলা চালানোর পর দীর্ঘদিনের দুই শত্রু রাষ্ট্র মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে। ওই হামলায় ইরানের এক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছিলেন।
ওই ঘটনার পর ইরান ইসরায়েলে সরাসরি নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে সামান্য। ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের অন্যান্য মিত্র তখন থেকে পাল্টা হামলা না চালানোর পক্ষে অবস্থান নেয়। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরুজালেম সফর করেন। পশ্চিমা বিশ্ব ওই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা জোরদারের ঘোষণা দেয়।
ইসরায়েল সরকারের মধ্যে থাকা কট্টরপন্থী অংশ ইরানকে কঠোর জবাব দেওয়ার চাপ দিচ্ছিল। কট্টরপন্থী ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির আজ শুক্রবার এক্স হ্যান্ডলে শুধু লিখেছেন, ‘দুর্বল’।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা দুই পক্ষকে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইইউ কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি। দুই পক্ষকে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। একইভাবে বেইজিং ও আরব দেশগুলো দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।