পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বাড়াচ্ছে ইরান: আইএইএ
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, ইরান তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বাড়াচ্ছে। ইরানের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা না পাওয়ার সমালোচনা করে সংস্থাটির গভর্নর বোর্ড প্রস্তাব পাস করার এক সপ্তাহ পর এমন কথা বলল আইএইএ।
আইএইএ-এর কাছ থেকে এএফপিকে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়েছে। এর থেকে জানা যায়, আইএইএ তাদের সদস্যদের বলেছে যে নাতাঞ্জ ও ফোরদৌতে পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে আরও বেশি ক্যাসকেড মজুত করছে তেহরান। বিষয়টি তেহরানের কাছ থেকেই আইএইএ জানতে পেরেছে।
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতিকে একসঙ্গে ক্যাসকেড বলা হয়ে থাকে।
তবে ইরানের এমন তৎপরতাকে মাঝারি ধরনের বলে উল্লেখ করেছে একটি কূটনৈতিক সূত্র।
গত সপ্তাহে ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আইএইএ-গভর্নর বোর্ডে ইরানের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা না পাওয়ার সমালোচনা করে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি উত্থাপিত প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে চীন এবং রাশিয়া। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর এটি এ ধরনের প্রথম প্রস্তাব।
প্রস্তাবটি তড়িঘড়ি করে দেওয়া হয়েছে এবং এটি বিবেচনাপ্রসূত নয় উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেছে ইরান।
প্রস্তাবটির ধরন প্রতীকী হলেও এর লক্ষ্য হলো ইরানের ওপর কূটনৈতিক চাপ জোরদার করা। এর মধ্য দিয়ে বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলার সুযোগ তৈরি হবে।
অতীতে দেখা গেছে একই ধরনের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর তেহরান নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনা থেকে নজরদারি ক্যামেরা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বাড়িয়ে দিয়েছিল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আইএইএ আজ যে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ইরান এমনভাবে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বিস্তৃত করে যাচ্ছে, যার মধ্যে কোনো নির্ভরযোগ্য শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্য নেই।’
মিলার জোর দিয়ে বলেছেন, ইরানকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে।
আইএইএ বলেছে, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দেশটির এখন কয়েক ধরনের আণবিক বোমা তৈরি করার মতো যথেষ্ট উপকরণ আছে।
২০১৫ সালে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় করা অঙ্গীকারগুলো থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে ইরান।
ওই পারমাণবিক চুক্তির আওতায় ইরানে পারমাণবিক কর্মসূচি স্থগিত করার বদলে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন।
চুক্তিটি নতুন করে সক্রিয় করার প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।