বন্দীদের দিনে শুধু এক টুকরা রুটি দিত: আবু সালমিয়া

গাজায় ফিরে নাসের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বক্তব্য দেন আল-শিফার পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া। পাশে ছিলেন মুক্ত হওয়া অন্য বন্দীরা। খান ইউনিস, গাজা উপত্যকাছবি: এএফপি

ইসরায়েলে বন্দী অবস্থায় নির্মম নির্যাতন করা হতো বলে দাবি করেছেন সদ্য মুক্তি পাওয়া গাজার আল–শিফা হাসপাতালের পরিচালক আবু সালমিয়া। আজ সোমবার তিনিসহ বেশ কয়েকজন ইসরায়েলের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে গাজায় ফেরেন। চিকিৎসার স্বার্থে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

গাজায় ফিরে খান ইউনিস শহরে নাসের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বক্তব্য দেন আবু সালমিয়া। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্রে বেশ কয়েকজন বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের খাবার ও ওষুধ দেওয়া হতো না।

নির্যাতনে আবু সালমিয়ার একটি বুড়ো আঙুল ভেঙেছে, এখনো সেরে ওঠেনি। তিনি বলেন, দুই মাস ধরে বন্দীদের সারা দিনে শুধু এক টুকরা রুটি দেওয়া হতো। বন্দীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হতো।

আল–শিফার প্রধান বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ আনা হয়নি।

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত জানায়, আটক কেন্দ্রগুলোর জায়গা খালি করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে এই বন্দীদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংস্থাটি জানায়, ইসরায়েলের বেসামরিক মানুষের ওপর হামলাকারী ‘সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে’ তারা। তাই বন্দীদের মধ্যে যাঁরা কম বিপজ্জনক, তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস হামলা চালানোর পর থেকে দেশটি গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। এ সময় আল-শিফা হাসপাতালেও বেশ কয়েকবার বড় ধরনের হামলা চালিয়ে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। নভেম্বের এ হাসপাতাল থেকেই আবু সালমিয়াকে ধরে নিয়ে যায় ইসরায়েল।

গাজা থেকে আবু সালমিয়াসহ শীর্ষ অনেক চিকিৎসক ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দী হয়েছেন। খান ইউনিসের দ্য গাজা ইউরোপিয়ান হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ জানায়, আজ যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান বাসাম মিকদাদও রয়েছে।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস সামরিক অভিযানের মুখে গাজার হাসপাতাল ও অবকাঠামোগুলোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

আরও পড়ুন

গত মে মাসে ফিলিস্তিনি অধিকার সংগঠনগুলো বলেছিল, আটক অবস্থায় আল-শিফা হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ সার্জন নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলের দাবি, তারা এ বিষয়ে কিছু জানে না।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামাস যোদ্ধাদের হামলার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি জানায়, এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৭ হাজার ৮৭৭ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক মানুষ।