ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান মাখোঁর
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এমন এক সময়ে তিনি এই আহ্বান জানালেন, যখন চলমান গাজা যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। পাশাপাশি সম্প্রতি লেবাননেও স্থল আগ্রাসন শুরু করেছে ইসরায়েল।
শনিবার সম্প্রচারমাধ্যম ‘ফ্রান্স ইন্টারকে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাখোঁ ওই আহ্বান জানান। মাখোঁ বলেন, ‘আমি আজকের এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে করি, রাজনৈতিক সমাধানে ফিরে যেতে গাজায় যুদ্ধ করার জন্য (ইসরায়েলকে) অস্ত্র সরবরাহ না করাই এখন আমাদের অগ্রাধিকার। ফ্রান্স কোনো (অস্ত্র) সরবরাহ করছে না।’
ফ্রান্স ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় কোনো দেশ নয়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে গাজায় রাজনৈতিক সমাধানের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় দেশটির বড় ভূমিকা রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করেছিল যুক্তরাজ্যও। তখন দেশটি বলেছিল, এ সব অস্ত্রের ব্যবহারে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের ‘স্পষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে।
মাখোঁ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর লেবাননে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা এড়ানোই’ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
এদিকে, মাখোঁর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন নেতানিয়াহু। মাখোঁর মন্তব্যকে ‘অমর্যাদাকর’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের নেতৃত্বাধীন বর্বর বাহিনীর বিরুদ্ধে ইসরায়েল যখন যুদ্ধ করছে, তখন সব সভ্য দেশের দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলের পাশে থাকা উচিত। (কিন্তু) তারপরও প্রেসিডেন্ট মাখোঁ ও অন্যান্য পশ্চিমা নেতারা ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। লজ্জা হওয়া উচিত তাঁদের।
শনিবার রাতে মাখোঁর কার্যালয় থেকে নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়ার জবাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ফ্রান্স ‘ইসরায়েলের অবিচল বন্ধু’। পাশাপাশি নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়াকে ‘মাত্রাতিরিক্ত এবং ইসরায়েল ও ফ্রান্সের মধ্যকার বন্ধুত্বের সঙ্গে যায় না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাখোঁর বিবৃতিতে ইসরায়েলের পাশাপাশি দেশটির সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গাজায় যুদ্ধ করার জন্য ইসরায়েলকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার মাখোঁর বিবৃতিকে ‘যুদ্ধ বন্ধের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও যথাযথ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছে।’
জর্ডানও মাখোঁর মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে ‘ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের’ ওপর জোর দিয়েছে।