দুর্নীতি মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু

আদালত কক্ষে বিচারকদের সামনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ১০ ডিসেম্বরছবি: এএফপি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দুর্নীতির মামলায় প্রথমবারের মতো সাক্ষ্য দিতে আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়েছেন। তেল আবিব ডিস্ট্রিক্ট আদালতে এ বিচারকাজ চলছে।

এর আগে নেতানিয়াহুকে অনেকবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি বারবার বিলম্ব করেছেন। ইসরায়েলে ক্ষমতাসীন কোনো প্রধানমন্ত্রীর এই প্রথম ফৌজদারি বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৯ সালে এসব মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়।

২০০৯ সাল থেকে নেতানিয়াহু প্রায় টানা ইসরায়েল শাসন করছেন। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, ‘সত্যিটা বলার জন্য আট বছর ধরে আমি এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছি। আমি একজন প্রধানমন্ত্রীও। আমি সাতটি ফ্রন্টে লড়াইয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আমি মনে করি, এ দুটি (মামলা ও যুদ্ধ) সমান্তরাল চলতে পারে।’

স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় নেতানিয়াহু আদালতে ঢুকেন। এ সময় তাঁকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখা যায়, মুখে লেগে ছিল হাসি। নিরাপত্তা আশঙ্কার কারণে এই বিচারকাজ জেরুজালেম থেকে সরিয়ে এখানে আনা হয়। আদালতের ভূগর্ভস্থ একটি কক্ষে এ বিচারকাজ চলে। এই আদালত দেশটির প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর থেকে ১৫ মিনিট দূরত্বে অবস্থিত।

আদালত কক্ষে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ১০ ডিসেম্বর
ছবি: এএফপি

নেতানিয়াহুকে আদালতে হাজির করার আগে তাঁর আইনজীবী অমিত হাদাদ বিচারকদের সামনে এ মামলার তদন্তে মৌলিক ত্রুটি রয়েছে দাবি করে, তা তুলে ধরেন।

এ মামলার বিচারকাজ চলার সময় আদালতের বাইরে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন তাঁর সমর্থক, অন্যরা গাজায় হামাসের হাতে বন্দী প্রায় ১০০ ইসরায়েলিকে ছাড়িয়ে আনতে আলোচনাসহ বেশ কিছু দাবি জানান।

এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। এ কারণে আদালত বেশ কয়েকবার নেতানিয়াহুর হাজিরে বিলম্বের বিষয়টি মঞ্জুর করেছেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার আদালত তাঁকে অবশ্যই সাক্ষ্য দিতে হাজির হতে বলেন।

আদালত বলেন, নেতানিয়াহুকে এসব মামলায় আদালতে সপ্তাহে তিনবার সাক্ষ্য দিতে হাজির হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে কোটিপতি বন্ধুদের কাছ থেকে উপহার এবং নিজের পক্ষে বেশ প্রচার পাওয়ার বিনিময়ে তিনি গণমাধ্যমের মালিকদের জন্য নিয়ন্ত্রক সুবিধার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। তবে নেতানিয়াহু কোনো ভুল করেননি বলে দাবি করেছেন। গতকাল সোমবার রাতেও সংবাদ সম্মেলন তাঁর কণ্ঠে এসব মামলা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। তদন্তের সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।