নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করল ইসরায়েল, গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গতকাল সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে একটি ‘বিতর্কিত’ বিল পাস হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ড এবং ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে সংস্থাটি কার্যক্রম চালাতে পারবে না।
গাজায় চলমান যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের জীবন রক্ষাকারী হিসেবে ধরা হয় জাতিসংঘের এই সংস্থাকে। যুদ্ধের একেবারে শুরু থেকে অতিপ্রয়োজনীয় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সামগ্রী নিয়ে গাজাবাসীর পাশে রয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ। তাই এখন ইসরায়েলের অনেক পশ্চিমা মিত্রও মনে করছে, গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও করুণ হয়ে উঠতে পারে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দেশটিতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএর অনেক কর্মী সরাসরি জড়িত। সংস্থাটির কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের সদস্য হিসেবেও কাজ করছে।
এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইউএনআরডব্লিউএর কর্মীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত। তাঁদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ্পি লাজারিনি বলেন, এই ভোটাভুটি জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটা ইউএনআরডব্লিউএকে অপবাদ দেওয়ার জন্য চলমান প্রচার এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের মানবিক উন্নয়নে সহায়তা ও সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংস্থার ভূমিকাকে অবৈধ প্রমাণ করার সর্বশেষ নজির।
এমন এক দিনে নেসেটে এই ভোটাভুটি হয়েছে, যেদিন ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো গাজার উত্তরাঞ্চলে আরও ভেতরে গিয়ে অভিযান চালিয়েছে। সেখানে প্রায় লাখ খানেক মানুষ আটকা পড়েছেন। ফিলিস্তিনি জরুরি পরিষেবা বলছে, হামাসের যোদ্ধাদের নির্মূল করতে অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরের একটি হাসপাতালে অভিযান চালানোর কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। বলা হয়েছে, ওই অভিযানে প্রায় এক শ সন্দেহভাজন যোদ্ধাকে আটক করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আর হামাসের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল সোমবার এক দিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন।