দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে গাজার বাসিন্দারা

ত্রাণের খাবারের জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিশু–কিশোরেরাছবি: এএফপি

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা গাজাকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই উপত্যকার প্রায় সব বাসিন্দা এখন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে। গাজা যুদ্ধ নিয়ে এভাবেই সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ না হলে সেখানকার পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ।

গাজায় ত্রাণসরবরাহ বাড়ানোর ব্যাপারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব তোলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সময় আজ শুক্রবার প্রস্তাবটি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। এর আগে গাজার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সেখানে দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে সতর্ক করল জাতিসংঘ।

গতকাল বৃহস্পতিবার খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের ২৩টিসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার করা একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে উঠে এসেছে, গাজায় এখন যত পরিবার চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, এর আগে বিশ্বের কোথাও এমন খাদ্যসংকটের রেকর্ড নেই। গাজার এ খাদ্যসংকট সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান ও ইয়েমেনের দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতিকেও ছাড়িয়ে গেছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হুসাইন বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি এত খারাপ যে নতুন করে খারাপ হওয়ার তেমন কিছু নেই। গাজায় যা ঘটছে, তার চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি কোথাও দেখিনি। আর এটা হচ্ছে খুব দ্রুত। মাত্র দুই মাসেই পরিস্থিতি এ পর্যায়ে এসেছে। গাজায় এখন যে পরিস্থিতি, তাতে বলতে গেলে সেখানকার প্রত্যেকের অনাহারে দিন কাটছে।’

জাতিসংঘের হিসাবে, গাজার ২৪ লাখ বাসিন্দার ১৯ লাখই এখন উদ্বাস্তু। ইসরায়েলি হামলায় বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়া এসব মানুষ আশ্রয়শিবিরগুলোয় ঠাঁই নিয়েছেন। সেখানে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। খাবার ও পানি না পেয়ে এসব মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহার-অনাহারে।

জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তাবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, ‘আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরেই সতর্ক করে আসছি যে গাজায় যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে এবং মানুষকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তাতে করে প্রতিদিনই আরও ক্ষুধা, রোগ–শোক ও দুর্দশা বাড়ছে।’