প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহর সঙ্গে ‘জাতীয় ঐক্যের’ চুক্তি করল হামাস

‘বেইজিং ডিক্লারেশন’ সই প্রত্যক্ষ করছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই (মাঝে)। ২৩ জুলাই ২০২৪, বেইজিংছবি: এএফপি

‘জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠায় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহ আন্দোলনসহ অন্যদের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের কথা ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। চীন বলেছে, এর ফলে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষে এ উপত্যকায় ফিলিস্তিনের সব পক্ষের সম্মিলিতভাবে শাসন করার সুযোগ তৈরি হবে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই–এর আমন্ত্রণে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক, ফাতাহর প্রতিনিধি মাহমুদ আল আলাওল এবং অপর ১২টি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা গতকাল মঙ্গলবার বেইজিংয়ে বৈঠকে বসেন।

ওয়াং ই বলেন, যুদ্ধপরবর্তী সময়ে গাজা শাসন করতে ‘অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় ঐক্যের’ সরকার গঠনে সম্মত হয়েছেন প্রতিনিধিরা।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা আবু মারজুক বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আজ (গতকাল) আমরা একটি চুক্তি সই করেছি। জাতীয় ঐক্য গড়ার মধ্য দিয়ে এ যাত্রা শেষ হবে।’

আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সমঝোতা হওয়ার বিষয়টি এ চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।
—ওয়াং ই, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গাজায় ৯ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের যুদ্ধ চলার মধ্যে ফিলিস্তিনের বিবদমান গোষ্ঠীগুলো নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ার এ ঘোষণা দিল। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। প্রতিশোধ হিসেবে ওই দিন থেকেই গাজায় তাণ্ডব চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলের দাবির বরাত দিয়ে এএফপির পরিসংখ্যান বলছে, হামাসের ওই হামলায় ১ হাজার ১৯৭ জন নিহত হন। এ ছাড়া ২৫১ জনকে জিম্মি করেন হামাসের যোদ্ধারা। জিম্মিদের মধ্যে ১১৬ জন এখনো গাজায় আছেন, মারা গেছেন ৪৪ জন।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত এ উপত্যকায় ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। ইসরায়েলের বিরামহীন হামলায় গাজায় তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।

ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে চীন। তবে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস ও পশ্চিম তীরের শাসকগোষ্ঠী ফাতাহর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এ প্রচেষ্টা জটিলতার মুখে পড়েছে।

ইতিমধ্যে হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল।

এদিকে গতকালের বৈঠক শেষে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো নিজেদের মধ্যে ‘ঐক্য’ প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ।

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। ইসরায়েলের বিরামহীন হামলায় এ উপত্যকায় তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন
জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আজ (গতকাল) আমরা একটি চুক্তি সই করেছি। জাতীয় ঐক্য গড়ার মধ্য দিয়ে এ যাত্রা শেষ হবে।
—আবু মারজুক, হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা

‘বেইজিং ঘোষণা’ নামের ওই চুক্তি সইয়ের পর ওয়াং বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সমঝোতা হওয়ার বিষয়টি এ চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।’

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর জন্য ঐক্য গড়া একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও একই সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ছাড়া এটি অর্জন করা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন